জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, গণভোট নিয়ে আপনারা তালবাহানা করবেন না। এ মাসের মধ্যেই গণভোটের আয়োজন করুন। তখন দেখা যাবে, জনগণ কাদের পক্ষে রায় দেয়। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, অথচ আপনাদের (বিএনপি) ছাড়া সব দলই এ বিষয়ে একমত হয়েছে। আপনারা যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে শ্রদ্ধা করুন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এটিএম আজহার বলেন, আমরা যদি একমত হয়েই জুলাই সনদে স্বাক্ষর দিয়ে থাকি, তাহলে এর আইনি ভিত্তি দিতে অসুবিধা কোথায়? একটি দল বাধা দিচ্ছে তারা বলছে, গণভোট নির্বাচনের দিনেই হবে। আপনি যদি গণভোটে রাজি থাকেন, তাহলে নির্বাচনের দিন মানুষ দুটি ভোট দেবে কেন? আগে গণভোট আয়োজন করলে অসুবিধা কোথায়? এর মানে নিশ্চয়ই ডাল মে কুচ কালা হে।
তিনি বলেন, যারা এ দেশে জন্মগ্রহণ করেছে, এ দেশেই ফাঁসির কাষ্ঠে মৃত্যুবরণ করেছে, মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে যায়নি- তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার একমাত্র গ্যারান্টি হতে পারে। এজন্য আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের নির্বাচন নয়, বরং সামগ্রিক পরিবর্তনের নির্বাচন। আমরা পেছনে ফিরতে চাই না। ২০২৪ সালে দামাল তরুণেরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে আন্দোলন করেছে এবং জীবন উৎসর্গ করেছে, তা পেছনে ফেরার জন্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাব। আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হয় স্বাধীনতা বিরোধী, দেশবিরোধী ইত্যাদি। কিন্তু যারা বলতেন, ‘আমরাই স্বাধীনতার শক্তি, আমরাই স্বাধীনতা এনেছি’ তারাই ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। যারা দেশ রক্ষার বদলে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়, তারা কি বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে? আমরা পালাইনি, পালাতে বিশ্বাসও করি না। আমরা চাই না, আবার স্বৈরশাসন কায়েম হোক, দুর্নীতিবাজদের স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠুক, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ুক। দেশকে আর সে পথে নেওয়া যাবে না।
ভারতকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, আপনারা আমাদের সঙ্গে দাদাগিরি করবেন, দেশের সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দেবেন, সংবিধান পরিবর্তন করবেন এর জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির শাসনের বদলে দিল্লির শাসন চাইনি আমরা। আমরা তারই প্রতিবাদ করেছি। গত ৫৪ বছরে ভারত আমাদের সঙ্গে প্রকৃত বন্ধুত্বের পরিচয় দেয়নি।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের নেতাকর্মীরা জনগণকে ফেলে রেখে বিদেশে পালায় না। বিদেশে বসে দেশে রাজনীতি করা যায় না। রাজনীতি করতে হলে জনগণের সঙ্গে থাকতে হয়। সামনে নির্বাচন যারা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চান, তারা জামায়াতে ইসলামকে ভোট দিন। একবার ভোট দিয়ে দেখুন, জামায়াতে ইসলাম পারে কিনা। আমরা ইসলামী দলগুলোকে একত্রিত করে একক ভোটবাক্সে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি, সেই আলোচনায় সফলতা আসবে।
জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা। এ সময় কেন্দ্রীয়, জেলা, ফেনী শহর জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেএন/টিএ