গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন সুইডেনের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন বিষয়ক দূত ইরিনা শুলজিন-ন্যোনি।
১১ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান এ সফরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিসহ নাগরিক সমাজ, উন্নয়ন সহযোগী, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে ঢাকার সুইডেন দূতাবাস। আলোচনার মূল বিষয় হবে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সহযোগিতা জোরদার করা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দূতাবাস জানায়, সুইডেন দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক পরিসরে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্যে দেশটি দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক পরিসরে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার থাকতে একজন বিশেষ রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত শুলজিন-ন্যোনির দায়িত্বের অংশ হিসেবে লিঙ্গসমতা, গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা এই তিনটি বিষয়ে সুইডেনের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় সুইডেন উন্নয়ন সহযোগিতা, রাজনৈতিক সংলাপ ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ, শিক্ষা ও যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ।
সফরটি বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইআর)-এর সঙ্গে সুইডেনের অংশীদারিত্বকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশের প্রথম ওএইচসিএইআর মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে এই সহযোগিতা আরও জোরদার হয়েছে।
সুইডেনের নমনীয় অর্থায়নে ওএইচসিএইআর জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও নাগরিক পরিসর সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এর আওতায় গুমের ঘটনা অনুসন্ধান কমিশন প্রায় দুই লাখ মামলার তথ্য নথিভুক্ত করেছে।
এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সুইডেন ও ওএইচসিএইআর একসঙ্গে ন্যায়বিচার, লিঙ্গ সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে, যার অংশ হিসেবে তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, আইন সংস্কার এবং তরুণ ও উদীয়মান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের ক্ষমতায়নে সহায়তা দিচ্ছে।
আরপি/টিএ