বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ যক্ষ্মা (টিবি) গত বছর ১২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি প্রকাশিত সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে যক্ষ্মাজনিত মৃত্যুর হার ৩ শতাংশ এবং নতুন সংক্রমণ ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, রোগটির বিরুদ্ধে অর্জিত অগ্রগতি এখনো ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৮ লাখ পুরুষ, ৩৭ লাখ নারী ও ১২ লাখ শিশু। যদিও এটি প্রতিরোধযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য রোগ, তবুও এখনও রোগটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। সংস্থার যক্ষ্মা ও সংক্রমণবিষয়ক প্রধান তেরেসা কাসায়েভা বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির পর এবারই প্রথম যক্ষ্মা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার উভয়ই হ্রাস পাচ্ছে, কিন্তু অর্থায়নের ঘাটতি এবং নতুন ঝুঁকির কারণে অর্জনগুলো ঝুঁকির মুখে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে যক্ষ্মা প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় ৫.৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে, যা ২০২৭ সালের লক্ষ্যমাত্রা ২২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক কম। বিশ্বব্যাপী মোট যক্ষ্মা আক্রান্তের দুই-তৃতীয়াংশের উৎস মাত্র আটটি দেশ-ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, চীন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, বাংলাদেশ এবং কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পুষ্টিহীনতা, এইচআইভি সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, ধূমপান ও অ্যালকোহল আসক্তি।
২০২৪ সালে রেকর্ড ৮৩ লাখ মানুষ নতুন করে শনাক্ত হয়ে চিকিৎসা পেয়েছেন, যার ফলে চিকিৎসা সফলতার হার বেড়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০০০ সাল থেকে সময়মতো চিকিৎসা পাওয়ায় ৮ কোটি ৩০ লাখ মানুষ যক্ষ্মামুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
সংস্থার মহাপরিচালক টেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘যক্ষ্মার বোঝা হ্রাস ও চিকিৎসা সেবার উন্নতি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক অগ্রগতি, কিন্তু এখনো প্রতি বছর এক মিলিয়নের বেশি মানুষের মৃত্যু আমাদের মানবিক ব্যর্থতার প্রতিফলন।’
এবি/টিকে