নদীনালা, খালবিলের অস্তিত্ব নেই। আছে শুধু দুই পাশে বাড়িঘর। দরকার নেই, তবুও নির্মাণ করা হচ্ছে ৯ কোটি টাকার সেতু। এই সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
সেতুটি নির্মাণে শুধু শুধু সরকারি টাকা গচ্চা যাবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। নির্মাণাধীন সেতুটির অবস্থান কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের রতনগঞ্জ খিলগাতী গ্রামে।
সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অর্থায়নে ৩৪ দশমিক ৮৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ৯ কোটি ১০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সেতু। এই নির্মাণকাজ পায় এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা লিমিটেড নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যে সেতুর পাইলিংয়ের কাজ চলমান।
কালিহাতী-সখীপুর সড়কের নাগবাড়ী ইউনিয়নের রতনগঞ্জ খিলগাতী গ্রামে নির্মাণ করা হচ্ছে সেতুটি। সাধারণত সেতু নির্মাণ করা হয় পানিপ্রবাহ কিংবা যেখানে কোনো খালবিল এবং নদীনালা থাকে, কিন্তু নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশে নেই কোনো জলাশয় বা নদী।
সরেজমিন দেখা মেলে, যেখানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, তার দুই পাশে ২৫ বছর আগে বাড়িঘর করা হয়ে গেছে। কোনো খালবিল, নদীনালা ও জলাশয় নেই যে পানি প্রবাহিত হবে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, এখানে সরকারি টাকা অপচয় না করে এই টাকা অন্য কোনো রাস্তায় কাজে লাগাতে পারত। রতনগঞ্জ বাজার এলাকার শাহ আলম জানান, নির্মাণাধীন সেতুর আশপাশে নদী বা খালের অস্তিত্ব নেই। আছে শুধু বাড়িঘর। এখানে সেতুর কোনো প্রয়োজন ছিল না।
খিলগাতী গ্রামের আজগর আলী বলেন, ‘গরু ছাড়া গোয়ালের যেমন মূল্য নেই। ঠিক তেমনি কোনো জলাশয় বা নদী ছাড়া সেতুর কোনো মূল্য নেই। এখানে কেন সেতু করা হচ্ছে, আমরা কেউ জানি না।’ নান্নু মিয়া নামে একজন জানান, অনেক আগে এখানে লোহার একটি সেতু ছিল, তখন কাজে লাগত। প্রায় ২৫ বছর আগে বাড়িঘর গড়ে ওঠায় খাল-বিলের কোনো অস্তিত্ব নেই এখানে। এখানে সেতু নির্মাণ করলে শুধু শুধু সরকারি টাকা গচ্চা যাবে।
মধুপুর সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদের ভাষ্য, তারা কোনো প্যানেল বন্ধ করতে পারেন না, আগে এখানে লোহার সেতু ছিল। সেখানে সেতু করতে হবে। তা ছাড়া ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য বন্যা হলে কীভাবে পানি প্রবাহিত হবে এ জন্য এখানে সেতু করা হচ্ছে। সেতুর পশ্চিম এবং রাস্তার দক্ষিণ পাশের গ্রামের লোকজনের হেঁটে যাওয়ার একটি রাস্তা আছে, সেখানে যে কোনো প্রতিষ্ঠান কালভার্ট বা সেতু করবে।
আইকে/এসএন