জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের মেডিকেল জোন সবচেয়ে আগে এগিয়ে এসেছিল বলে জানিয়েছেন ডাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম। সেই সময়ের চিকিৎসক সংকটের কঠিন মুহূর্তে শিবিরের মেডিকেল শাখার সদস্যরাই পুরো তদারকি করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রশিবির মেডিকেল জোন শাখার নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব দাবি করেন।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে নবীনবরণ আয়োজন করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মেডিকেল জোন শাখা। ঢাকার সব মেডিকেল ক্যাম্পাস মিলিয়ে গঠিত এই শাখা এবারই প্রথমবার প্রকাশ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে ডাকসু ভিপি বলেন, জুলাই বিপ্লবে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ভাইবোনদের রক্তাক্ত করেছিল, তখন সবার আগে পাশে দাঁড়িয়েছিল ছাত্রশিবিরের মেডিকেল জোনের ভাইয়েরা। সেদিন হাসপাতালে যে পরিমাণ রোগী ছিল, সে তুলনায় চিকিৎসক ছিল না। ওই সংকট সামলেছে ছাত্রশিবিরের মেডিকেল টিম।
তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের হাসপাতালে হামলা করে, ঠিক সেই কায়দায় ১৫ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগ বারবার হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আহতদের চিকিৎসার সামগ্রিক তদারকি করেছেন মেডিকেল জোনের শিবিরকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। সভাপতিত্ব করেন শাখা সভাপতি ডা. যায়েদ আহমাদ। সঞ্চালনায় ছিলেন শাখার সেক্রেটারি ডা. জুলফিকার আলী।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা ইশরাত জাহান রিফাত। তিনি চিকিৎসা শিক্ষার নতুন ইন্টিগ্রেটেড কারিকুলাম সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বাস্তব পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আগের মতো বিচ্ছিন্নভাবে অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি নয়- বর্তমান কাঠামো শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুবিধা তৈরি করছে।
বিশেষ আলোচনায় অংশ নেন ছাত্রলীগের হাতে নিপীড়নের শিকার শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক এবং সাবেক মেডিকেল জোন সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন হল দখল, সিট বণ্টনে বৈষম্য এবং জবরদস্তিমূলক রাজনীতির অভিজ্ঞতা।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. যায়েদ আহমাদ বলেন, মেডিকেল জোনের নবীনবরণ আয়োজন শিবিরের নতুন ধারার সূচনা করেছে।
তিনি বলেন, অতীতের স্বৈরাচারী সময়ে হলে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হতো, পাঁচ আগস্টের পর এসব দুঃশাসনের অবসান হয়েছে।
অনুষ্ঠানে দেড় হাজারের মতো নতুন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।
টিজে/টিকে