প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা সফলভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের নিয়ত পরিষ্কার। সবার সহযোগিতা পেলে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব হবে।’
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দ্বিতীয় সেশনে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে এমন আলোচনা হয়।
অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে তিন দিনে দুই পর্বে সংলাপ সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
দ্বিতীয় ধাপে জাকের পার্টি, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পাটি), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে দলগুলোর পক্ষ থেকে ইসির স্বাধীনতার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব আব্দুস সামাদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা থেকে ইসি নিয়ন্ত্রিত হলে সে কমিশন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও দিতে পারে না।’
তিনি প্রতীক বরাদ্দের মতো বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘এতে ইসির স্বাধীনতা, দৃঢ়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ইসি স্বাধীন নয় বুঝতে পেরেছি।’
জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার কালো টাকা ও পেশীশক্তির দৌরাত্ম্য বন্ধ করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে নির্বাচন তামাশার হবে।’
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ আচরণবিধির কিছু বিধানের সমালোচনা করে বলেন, ‘ইসি প্রার্থীর হাত-পা বেঁধে দিচ্ছে।
'তিনি বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রচারণায় না থাকার বিধানের সমালোচনা করেন।
এআইয়ের অপব্যবহারের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পর্নোগ্রাফি থেকে শুরু করে হেন কোনো বাজে কাজ নেই, যা তার নামে ছড়ানো হচ্ছে না।’ তিনি ইসির কাছে জানতে চান, কিভাবে তারা এই সিভিয়ার প্রবলেম মোকাবেলা করবেন।
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুনতাসীর আলী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে যৌথ বাহিনী মোতায়েন, নির্বাচনের তিন দিন আগে সেনা মোতায়েন এবং কালো টাকার প্রভাব বন্ধে ইসির নিজস্ব গোয়েন্দা টিম রাখার দাবি জানান।
তখন সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।
সব ভেঙে বলার দরকার নেই, নানা প্রতিকূলতা রয়েছে।’
তিনি জানান, প্রবাসীদের ভোট এবং দেশের ভেতরে তিন ধরনের ব্যক্তির জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করে তারা সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘চেষ্টার ত্রুটি নেই, আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। আমরা সব ধরনের চ্যালেঞ্জ আন্তরিকতা, ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করছি।’
সিইসি আরো বলেন, ‘সব কিছু মিলিয়ে আমাদের প্রস্তুতি, সীমাবদ্ধতার মধ্যে চেষ্টার ত্রুটি নেই। মুখে যা বলছি তা-ই নিয়ত। সবাইকে নিয়ে নিয়ত ফুলফিল করতে পারব। আল্লাহ তালাহ সাহায্য করবেন যেহেতু আমাদের নিয়ত সাফ।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আচরণবিধি প্রতিপালনে আমরা কঠোর ভূমিকায় যাব, কাউকে ছাড় দেব না। তফসিল ঘোষণার পরে কঠোর হবো, অন্যায়ের ক্ষেত্রে আমরা কাউকে চিনব না।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এআইয়ের অপপ্রচার প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভালো তথ্য দিয়ে খারাপ তথ্যকে হ্যান্ডল করতে হবে এবং চিহ্নিতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘আপনারা সহযোগিতা করলে আলহামদুল্লিাহ, আর অসহযোগিতা করেন তো ইন্নালিল্লাহ।’
এসএন