বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের স্বত্ব সংরক্ষিত গান অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০শে নভেম্বর) ঢাকা জেলা জজ আদালতে শাহ আবদুল করিমের একমাত্র পুত্র ও কপিরাইট উত্তরাধিকারী শাহ নূর জালাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহীসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ ও আইনি নোটিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণফোন কোনো প্রকার অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়াই শাহ আবদুল করিমের কপিরাইটযুক্ত গানগুলো পুনরুৎপাদন, প্রচার, ডিজিটাল মাধ্যমে আপলোড এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেছে। বিশেষভাবে 'রঙিলা বাড়ৈ' এবং 'কোন মিস্ত্রি নাও বানাইছে'- এই দুটি গান ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন ও ডিজিটাল প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট এ বিষয়ে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। নোটিশে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট অপসারণ, কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের জন্য দুঃখপ্রকাশ এবং প্রতিটি গানের জন্য ১০ কোটি টাকা করে মোট ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়। তবে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর বা সন্তোষজনক প্রতিকার না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহ নূর জালালের আইনজীবী রাজিন আহমেদ বলেন, শাহ আবদুল করিমের গান কেবল সংগীত নয়-এগুলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অংশ। 'রঙিলা বাড়ে' ও 'কোন মিস্তরি নাও বানাইছে' গান দুটি গ্রামীণফোন অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেছে, যা কেবল অবৈধ নয়, বরং চরম অসম্মানজনক। আমরা তাঁর উত্তরাধিকার রক্ষায় আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাই গ্রহণ করব।
বাদী শাহ নূর জালাল বলেন, আমরা গ্রাম্য মানুষ, বড় কোম্পানির নিয়ম বুঝি না। কিন্তু বাবার গানের কপিরাইট আমাদের। অনেকে গান করেন, সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যখন বিজ্ঞাপন বা বাণিজ্যিক কাজে গান ব্যবহার করে, তখন তাদের অনুমতি নেওয়া উচিত এবং আমাদের ন্যায্য সম্মান, অধিকার ও অংশ দেওয়া উচিত। গ্রামীণফোন তা করেনি, তাই আমরা মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
ইউটি/টিএ