রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে কম্পন শুরু হয়। ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৭ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহওয়া অধিদপ্তর।
ভূমিকম্পের আকস্মিকতা ও তীব্রতা সারা দেশের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে। দ্রুত রাস্তায় নেমে আসেন রাজধানীবাসী এবং দেশজুড়ে মানুষ সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন।
এই কম্পনের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে দেশের তারকা অঙ্গনেও। সামাজিক মাধ্যমে তারকারা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, অনুভূতি এবং দেশবাসীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল লিখেছেন, ‘আল্লাহ, জীবনে এত বড় ভূমিকম্প প্রথমবার অনুভব করলাম। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করো।’
অভিনেতা আব্দুন নূর সজল লিখেছেন, ‘এটা কি? ভূমিকম্প! আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।’ রওনক হাসান লিখেছেন, ‘ওরে ঝাঁকি! এ কি ভূমিকম্প! সবাই ঠিক আছেন তো?’
ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা জানিয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘আমি থাকি ১৪ তলা ভবনের ৫ম তলায়। নাস্তা খেয়ে বসেছিলাম, হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি।
পুরো বিল্ডিং কাঁপছে। জানালা দিয়ে দেখলাম পাশের বিল্ডিং দোলনার মতো দুলছে। মানুষজন চিৎকার করছে। আমরা রুমের আড়ার নিচে দাঁড়ালাম। মনে হচ্ছিল পুরো ভবন ভেঙে পড়বে।
জীবনে ভূমিকম্প বহুবার অনুভব করেছি—কিন্তু এমন তীব্রতা কখনো পাইনি। সবাই ভালো থাকুন।’
চিত্রনায়িকা বর্ষা লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমত। না হলে আরও ৫–৬ সেকেন্ডে কী হতো! একদিন এমন এক জুম্মাবারে, এমন একটি ঝাঁকুনিতে সব ধ্বংস হয়ে যাবে। সূরা যিলযালে আল্লাহ সেই দৃশ্যের ভয়াবহতা বলে দিয়েছেন। যারা উঁচু দালান থেকে ভূমিকম্প অনুভব করেছেন, তাঁরা ভালো টের পেয়েছেন। সেই দিন আসন্ন—অবশ্যই আসবে। ঠিক এমনই কোনো এক জুম্মাবারে।’
কুদ্দুস বয়াতি লিখেছেন, ‘এই প্রথম ভূমিকম্পের সবচেয়ে বড় ঝাঁকুনি অনুভব করলাম।’
জনপ্রিয় ব্যান্ডদল শিরোনামহীন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুকে লিখেছে, ‘প্রচণ্ড ভূমিকম্প। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন। তাঁর দয়া ছাড়া ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে বেশি সময় লাগবে না।’
অভিনেতা ও নির্মাতা কচি খন্দকার লিখেছেন, ‘গভীর ঘুমে ছিলাম, ভূমিকম্প জাগিয়ে দিলো। ভূমিকম্পের ভয়াবহতার কথা শুনেছি, আজ সত্যিকারের উপলব্ধি হলো। মানুষের পাশে মানুষ থাকি—মানবিকতা জেগে উঠুক।’
অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু লিখেছেন, ‘এ যাত্রায় ঢাকা শহর বেঁচে গেলো। বাসায় একা ছোটটা (ছোট ছেলে) পাশে ড্রইং স্কুলে, বড়টা (বড় ছেলে) স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে। মেঝেতে বসে ছিলাম, হঠাৎ মনে হলো চারপাশ ভেঙে আসছে। নিচ থেকে ওপর দিকে টানা ঝাঁকুনি—চারপাশের কাঁচের ফিটিংস ও জিনিসপত্র ঝনঝন শব্দ করছে। একসময় মনে হলো আর বাচ্চাদের মুখ দেখা হবে না। ছয়তলা সিঁড়ি দৌড়ে নেমে রাস্তা ধরে ছোটটার স্কুলে ছুটলাম। আলহামদুলিল্লাহ, ওরা সবাই ভালো আছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে কম্পন শুরু হয়। এতে এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে, চলতি বছরের ৫ মার্চ রাজধানীতে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।
ইএ/টিকে