টলিপাড়ায় আজকাল যেন আলোচনার কেন্দ্রে শুধু একটাই বিষয় চিরদিনই তুমি যে আমার ধারাবাহিকের অস্থিরতা, আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে জিতু ও দিতিপ্রিয়া। ধীরে ধীরে এই অশান্তি পর্দা পেরিয়ে পুরো ইন্ডাস্ট্রির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, স্পষ্ট হয়ে উঠেছে দুই পক্ষের টানাপোড়েন।
গত সোমবার প্রযোজনা সংস্থা একটি সমঝোতা বৈঠক ডেকে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু বৈঠকে নাকি জিতুর মুখে রাগের ঝাঁজ টের পাওয়া যায়। তিনি মাঝপথেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপর শোনা যায়, অপসারণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল নির্মাতা কর্তৃপক্ষ। এমনও গুজব ছড়ায় যে, নিজেই নাকি আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র জমা দিয়ে দিয়েছিলেন জিতু।
কিন্তু দর্শকদের প্রবল চাপ, নেটমাধ্যমে ক্ষোভ আর সমর্থনের ঢেউ শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেয়। নির্মাতারা সিদ্ধান্ত বদলান। জিতুকে ফিরিয়ে আনা হয়, আর শুক্রবার সকালে তিনি আবার নিয়মমতো শুটিংয়ে যোগও দেন।
এই উত্তপ্ত সময়ের মধ্যেই আচমকা ভাইরাল হলো জিতুর বহু আগের একটি সাক্ষাৎকার গৃহপ্রবেশ ছবির মুক্তির সময়কার। সেখানে তাঁকে নিজের স্বভাব নিয়ে অত্যন্ত খোলামেলা মন্তব্য করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, অনেকে তাঁকে ‘নাক উঁচু’ বা ‘অহংকারী’ মনে করেন, কিন্তু এসব মন্তব্যে তিনি গুরুত্ব দেন না।
জিতুর ভাষায়, মা তাঁকে শিখিয়েছিলেন মানুষকে শ্রদ্ধা করতে, নারীকে সম্মান করতে, অন্যায় দেখলে চুপ না থাকতে। তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন, যারা তাঁকে কঠিন স্বভাবের বলে ভুল বোঝেন, তারা আসলে তাঁর মনোভাব বুঝতে পারেন না। নিজের রসিক ভঙ্গিতে তিনি বলেন, তাঁর নাক এমনিতেই লম্বা, তাই আলাদা করে নাক উঁচু হয়ে থাকার প্রয়োজন নেই।
মায়ের শিক্ষার প্রসঙ্গে আলো ছড়াতে গিয়ে জিতু বলেন, অন্যায় মেনে নেওয়া মানে সেই অন্যায়েই অংশ নেওয়া। সুবিধা পাওয়ার আশায় চুপ থাকা মানে অন্যায়কে বাড়তে দেওয়া। তাই অন্যায়ের সামনে সাহস করে দাঁড়ানোই তাঁর কাছে জীবনের সত্যিকারের প্রবেশদ্বার এই শিক্ষাকেই তিনি নিজের ‘গৃহপ্রবেশ’ বলে মনে করেন।
টলিপাড়ার ঝড় এখনও পুরো থামেনি ঠিকই, তবে জিতুর এই পুরনো সাক্ষাৎকারে পাওয়া দৃঢ়তা আর মূল্যবোধের কথা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ধারাবাহিকের সামনে এগোনো পথ কতটা মসৃণ হয়।
আরপি/টিকে