বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, তাহরিকে খতমে নবুয়ত বাংলাদেশ-এর আমির ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, একটি ফ্যাসিবাদ ১৬ বছর দেশের সব গোস্ত খেয়ে হাড্ডিগুলো রেখে গেছে। এখন আরেকটি দল এসে সেই হাড্ডি চাটছে। আগে ঘুস যেতো বস্তায় বা ব্যাংকের চেকে—এখন তা যাচ্ছে অন্য পথে। তারপরও দেশ ঠিক হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ফেরাউনেরও উপদেষ্টা পরিষদ ছিল, তারা শক্তি নিয়ে বসে থাকত। কিন্তু আল্লাহভীতি ছাড়া ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কোনোদিনও সঠিক পথে চলতে পারে না।
শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের সোন্দ্রমে উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও মনোনয়নপ্রত্যাশী এটিএম মিজানুর রহমানের আয়োজনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় অনুষ্ঠিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী।
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ড. আব্বাসী বলেন, চলমান গণভোট দেশের জন্য অশুভ সংকেত। এটি নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দেওয়ার কৌশল এবং বাংলাদেশকে অরাজকতা ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। তিনি উল্লেখ করেন, ঐকমত্য কমিশনের ৯ মাসের বৈঠকে ৮৪টি বিষয়ে সম্মতি হলেও বাকিগুলোতে হয়নি। এর মধ্যেই আবার শুরু হয়েছে ‘গণভোট হবে কি, হবে না’—এ বিতর্ক।
১৯৭৭ সালের গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা দাবিতে গণভোট করেছিলেন। সেই গণভোটের মাধ্যমে ইসলামি মূল্যবোধ সংবিধানে স্থান পায়। পরে সেই নীতি বাদ দেওয়ার যে উদ্যোগ হয়েছে, তা মুসলমানদের ঈমানের ওপর সরাসরি আঘাত।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমানের একটি ভালো কাজ হলো সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করা। এর জন্য আমি তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করি।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি গণভোটের মাধ্যমে এমন কোনো সংবিধান অনুমোদিত হয়, যেখানে আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের কথা বাদ দেওয়া হয়, তাহলে কোনো মুসলমানের উচিত নয় তাতে অংশ নেওয়া। এটি ঈমানের প্রশ্ন, এমন ভোট আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহির কারণ হতে পারে।
ড. আব্বাসী দেশের মানুষকে সত্যবাদীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই সময়টি আমাদের ঈমান, দেশ ও ভবিষ্যতের পরীক্ষা।
মাহফিল শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী। এ সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, জিয়া পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং দেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে এটিএম মিজানুর রহমানের উদ্যোগে ১০টি গরু ও ২টি মহিষ জবাই করে ২৫ হাজার মুসল্লির জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এটিএম মিজানুর রহমান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন আহমেদ, হারুন মেম্বার, মো. বাদল, সোহেল আহমেদ (কফি হাউস), ছাত্রদলের নেতা সাইফ উদ্দিন সবুজ, সুমন মাস্টারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ইউটি/টিএ