বলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি হিট দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র
পাঁচ দশকেরও বেশি সময়জুড়ে সক্রিয় ক্যারিয়ার উপভোগ করা ধর্মেন্দ্র প্রথম বড় বাণিজ্যিক সাফল্য পান ১৯৬১ সালের ‘শোলা অউর শবনম’–এর মাধ্যমে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রোমান্টিক নায়ক থেকে অ্যাকশন হিরো— সব ধরনের ভূমিকাতেই তিনি ছিলেন সাবলীল। ধীরে ধীরে তিনি পর্দায় পুরুষত্ব ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে ওঠেন। খুব দ্রুতই তিনি পান ‘হিন্দি সিনেমার হি-ম্যান’ উপাধি, যা বহু দশক ধরে তাঁর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
কিন্তু শুধু তাঁর স্টাইল, শক্তি বা ব্যক্তিত্বই তাঁকে অনন্য করেনি; বরং বলিউডের বক্স অফিসে তাঁর যে অসাধারণ রেকর্ড, সেটিই তাঁকে আলাদা করে তোলে। হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি হিট দেওয়ার রেকর্ড ধর্মেন্দ্রর দখলেই, এবং এটি আজও কেউ ভাঙতে পারেননি।
২৪০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি; এর মধ্যে ৯৪টি সফল হয়েছে, যার মধ্যেই ৭৪টি ‘সার্টিফায়েড হিট’। তাঁর নামের পাশে রয়েছে ৭টি ব্লকবাস্টার এবং ১৩টি সুপারহিট। ‘শোলে’ তো ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা ও সর্বাধিক ব্যবসাসফল ছবির মর্যাদায় আজও অমলিন।
অমিতাভ বচ্চনের ৫৬টি হিট, সালমান খানের ৩৮, শাহরুখ খানের ৩৪ ও আমির খানের ২০টি- সবই ধর্মেন্দ্রর হিটের সংখ্যার নিচে। মাস–অ্যাপিল এবং ধারাবাহিকতার জন্য পরিচিত জিতেন্দ্র (৫৬), মিঠুন চক্রবর্তী (৫০), রাজেশ খান্না (৩৮), অক্ষয় কুমার (৩৯)- কেউই পৌঁছাতে পারেননি ধর্মেন্দ্রর অবিশ্বাস্য মোট হিটসংখ্যার কাছে।
এ সংখ্যাগুলো কেবল পরিসংখ্যান নয়- এগুলো সেই যুগের প্রতিচ্ছবি, যখন ধর্মেন্দ্র ছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বক্স অফিস শক্তি। অ্যাকশন, রোমান্স, কমেডি, ড্রামা- যে ধারাই হোক না কেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। সময় বদলেছে, নতুন নায়ক এসেছে—তবু তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো ম্লান হয়নি।
ধর্মেন্দ্রর শেষ দিকের কাজ
জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত অভিনয়ের প্রতি তাঁর নিবেদন অটুট ছিল। সর্বশেষ তাঁকে দেখা গেছে ২০২৪ সালের তেরি বাতোঁ মোঁ অ্যায়সা উলঝা জিয়া ছবিতে। শহীদ কাপুর ও কৃতি স্যাননের সঙ্গে তার অভিনয়ও মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। শেষবারের মতো দর্শক দেখতে পাবেন শ্রীমান রাঘবনের যুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘ইক্কিস’–এ, যেখানে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন আগস্ত্য নন্দা। ছবিটি মুক্তি পাবে আগামি ২৫ ডিসেম্বর, আর সেটিই হবে সিনেমার প্রতি তাঁর শেষ অভিনয়–শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ধর্মেন্দ্রর প্রস্থান একটি যুগের অবসান ঘটাল। শুধু বলিউড নয়, পুরো সিনেমা দুনিয়া তাঁর শূন্যতা অনুভব করবে! ইকোনোমিকস টাইমস
এসএন