মার্কিন বাজারে দ্রুত কমছে চীনা পোশাকের আমদানি। সেই জায়গা দখলে সবচেয়ে এগিয়ে ভিয়েতনাম। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি অর্ধেক হলেও প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে শীর্ষে। এ অবস্থায় বাজার হিস্যা বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারের পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে জ্বালানি সংকট দূর আর ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার না কমলে কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না বলে দাবি রপ্তানিকারকদের।
চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত তৈরি পোশাক আমদানি ৩.৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বের শীর্ষ এই ধনী দেশে ক্রমেই কমছে চীনা পোশাকের আধিপত্য। মার্কিন বাণিজ্য দফতরের (অটেক্সা) তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে চীন থেকে ১ হাজার ৭০ কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার ডলারের পোশাক আমদানি করেছে ওয়াশিংটন। সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে তা নেমেছে ৭৯৭ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ডলারে। শতাংশের হিসাবে কমেছে সাড়ে ২৫ শতাংশের বেশি।
একদিকে একটু একটু করে বাড়ছে মার্কিন পোশাকের বাজার, অন্যদিকে কমছে রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা চীনের জোগান; তাহলে আধিপত্য বাড়ছে কার? এমন প্রশ্নের উত্তরও রয়েছে অটেক্সার পরিসংখ্যানে।
গত মার্চে মার্কিন পোশাকের বাজারে চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ হয়ে ওঠে ভিয়েতনাম। এরপর বাড়তে থাকে ব্যবধান; গত আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে চীনের চেয়ে ৩০৮ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ৫৩৩ ডলার মূল্যের পোশাক বেশি রপ্তানি করেছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটি। বছর ব্যবধানে ভিয়েতনামের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫.৭২৬ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ছে বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানিও। চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.৮২৮ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৬৪ কোটি ২৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৭৬ ডলারে।
শুল্ক যুদ্ধের মধ্যেই মার্কিন বাজার সম্প্রসারণে নীতি সহায়তা নিয়ে সরকারকে পাশে চান রপ্তানিকারকরা। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘দেশে জ্বালানি সংকট চরমে, ব্যাংকগুলোও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়-কেউই স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। রপ্তানি টিকিয়ে রাখতে হলে এখনই সময়োপযোগী নীতি গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।’
রপ্তানি আয় বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও উন্নত করা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইংকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে, যাতে রপ্তানি সুযোগ বাড়ানো যায়।’
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে চতুর্থ অবস্থানে থাকা ভারত এসময়ে প্রবৃদ্ধি দেখছে ১৬.০৯১৬ শতাংশ। আর বছর ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়ার পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৫.৯৮ শতাংশ।
ইএ/টিকে