চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আটক ব্যক্তির নাম সীমান্ত ভৌমিক (১৯)। খুলনা সদরের এই যুবক ২০২৪ সাল থেকে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা থেকে তাকে ধরে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইখলাস বিন সুলতান বলেন, ‘সীমান্তের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীর মতোই। তবে আচরণগত অসঙ্গতি ও বিভিন্নজনের কাছে টাকা ধার চাওয়ার ঘটনা সন্দেহ তৈরি করে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল শুনলাম সীমান্ত আরেকজনের কাছে টাকা চেয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দেখা করে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়।’ দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন জানান, ২০২৪ সালে রেল ক্রসিং এলাকায় তাদের প্রথম পরিচয় হয়। দক্ষিণ ক্যাম্পাসে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। তার মাধ্যমেই সীমান্তের পরিচয় হয় দোকানদার ও অন্যান্য শিক্ষার্থীর সঙ্গে।
সাখাওয়াত বলেন, ‘সে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নিত। আজ সন্দেহজনক আচরণের কারণে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সে মেরিন সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও বিভাগে কেউ তাকে চেনে না। এরপর আমরা তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত জানান, ২০২৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে আর. কে. টাওয়ারের পাশে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। এক পরিচিত বড় ভাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্নজনের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালে মোট ১৮ হাজার ৬০০ টাকা বিভিন্ন দোকানদার ও শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়েছেন। এ বিষয়ে চবি প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন অনেক সচেতন। তাদের উদ্যোগেই দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী সেজে ঘুরে বেড়ানো সীমান্তকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, সে বহুজনের সঙ্গে লেনদেনে জড়িত। তাকে নিরাপত্তা দফতরে হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও আরেক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। তবে দুই ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট এক নয় বলে ধারণা করছি।’ উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর রাতে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো মোহাম্মদ মিনহাজ নামে আরেক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করার অভিযোগও ওঠে। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল বডি হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করে।
এসএস/এসএন