টিআইবি

সামাজিক নিরাপত্তায় আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ মাত্র মোট বাজেটের ০.৫১ শতাংশ

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠী চরমভাবে উপেক্ষিত। গত পাঁচ অর্থবছরের (২০২০-২১ থেকে ২০২৫-২৬) মোট বাজেটের তুলনায় আদিবাসীদের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ ছিল মাত্র ০.৫১ শতাংশ বা গড়ে ৫৭৮ কোটি টাকা। অথচ দেশের আদিবাসীদের দারিদ্র্যের হার জাতীয় হারের (১৮.৭%) তুলনায় সমতলে ৮০ শতাংশ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬৫ শতাংশে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেছে।

টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, অপ্রতুল বরাদ্দের পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে যোগ্য আদিবাসীরাও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

গবেষণায় উঠে আসা প্রধান চিত্র

অত্যন্ত কম বরাদ্দ : গত ৫ বছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বার্ষিক গড় বাজেট ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে আদিবাসীদের জন্য গড় বরাদ্দ ছিল মাত্র ০.৫১ শতাংশ (৫৭৮.৮৫ কোটি টাকা)।

ভাতা পেতে ঘুষ : বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব, ভিজিএফসহ বিভিন্ন পণ্যভিত্তিক কর্মসূচিতেও সুবিধাভোগী নির্বাচিত হতে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হচ্ছে।

নীতিমালার দুর্বলতা : প্রাসঙ্গিক আইন ও নীতিমালায় আদিবাসীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোটা বা অগ্রাধিকার না থাকায় তাদের অন্তর্ভুক্তির হার প্রত্যাশিত পর্যায়ে নেই।

এমএফএস সিস্টেমে প্রতারণা : এমএফএস এজেন্টরা নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতিবার ভাতা উত্তোলনে ৫০-১০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে। এছাড়া পিন চুরি করে ভাতা আত্মসাতের ঘটনাও ঘটছে।

অন্তর্ভুক্তিতে বাধা : জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব না থাকা, আবেদন প্রক্রিয়ার জটিলতা, এবং প্রচার ও অভিযোগ প্রতিকার কাঠামোর আদিবাসীবান্ধব না হওয়াই প্রধান বাধা।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী হিসেবে আদিবাসীদের অগ্রাধিকার না দেওয়া এবং তাদের সংস্কৃতি ও চাহিদাকে গুরুত্ব না দেওয়াই এই যথাযথ অন্তর্ভুক্তির পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।

টিআইবি এ বিষয়ে আইএলও কনভেনশন ১৬৯ অনুস্বাক্ষর করাসহ মোট ১৪টি সুপারিশ পেশ করেছে।

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিলো পাকিস্তান Dec 02, 2025
img
জাহানারা ইস্যুতে বিসিবির আনুষ্ঠানিক বিবৃতি Dec 02, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১০৬ মামলার চার্জশিট দাখিল Dec 02, 2025
img
ওটিটিতে শাকিবের নতুন সিনেমা ‘অন্তরাত্মা’ Dec 02, 2025
img
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা : নির্বাচন কমিশনার Dec 02, 2025
img
আমি মনে করি,মানুষ ভালোবাসা পেলে সুন্দর হয়: অপু বিশ্বাস Dec 02, 2025
img
বিয়ে করলেন পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান Dec 02, 2025
img
মানুষের নয়, কোরআনের আইনে চলবে দেশ : মুজিবুর রহমান Dec 02, 2025
img
ভারতের রুশ তেল আমদানি কমানো দীর্ঘস্থায়ী হবে না : ক্রেমলিন Dec 02, 2025
img

টিআইবি

সামাজিক নিরাপত্তায় আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ মাত্র মোট বাজেটের ০.৫১ শতাংশ Dec 02, 2025
img
রাশ্মিকা ও কৃতিকে নিয়ে ভিজ্যুয়াল চর্চা, কাহিনি হারাচ্ছে প্রেক্ষাপট Dec 02, 2025
img
কেমন আছে কনটেন্ট ক্রিয়েটর আল আমিন! Dec 02, 2025
img
ইসলামপন্থিরা ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজি থাকবে না: রেজাউল করীম Dec 02, 2025
img
বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসায় ব্রিটিশ চিকিৎসক টিম আসবে বুধবার Dec 02, 2025
img
ব্যাপারটাকে ভীষণ এনজয় করি : সৌরভ Dec 02, 2025
img
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শিবিরের সাবেক নেতা Dec 02, 2025
img
নায়িকাদের চোখে নিরাপদ এবং সম্মানজনক নায়ক জিৎ: রবি কিনাগী Dec 02, 2025
img
বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক পশ্চাৎ যাত্রার ধারা ঘুরিয়ে দিতে পারে : ইইউ রাষ্ট্রদূত Dec 02, 2025
img
কুকুরছানার ঘটনায় অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন নিলয় Dec 02, 2025
img

ফেডারেশন কাপ

ফর্টিজকে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষে মোহামেডান Dec 02, 2025