ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার ভারতীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, রাশিয়া থেকে ভারতে তেল আমদানি কমে যাওয়ার প্রবণতা সম্ভবত ‘স্বল্প সময়ের জন্যই’ থাকবে, কারণ মস্কো নয়াদিল্লিতে সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
সমুদ্রপথে রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপে মস্কো থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি কমিয়েছে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া।
ওয়াশিংটন রাশিয়ার শীর্ষ তেল উৎপাদক রোজনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর চলতি মাসে ভারত রুশ তেল কেনা অন্তত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের কয়েক দিন আগে মঙ্গলবার অনলাইন এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পেসকভ ভারতীয় সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া এখনো ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সরবরাহকারী।
তিনি বলেন, তৃতীয় কোনো দেশের প্রভাবে যাতে ব্যাহত না হয় এমন বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা প্রয়োজন। তিনি যোগ করেন, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বাণিজ্য পরিচালনার বিষয়ে রাশিয়ার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (এমআরপিএল), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (এইচপিসিএল) এবং এইচপিসিএল-মিত্তল এনার্জি লিমিটেডসহ ভারতের কয়েকটি শোধনাগার রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে রুশ তেল কেনার আদেশ দিয়েছে। অন্যদিকে ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে অগ্রসর পর্যায়ের আলোচনায় রয়েছে।
রাশিয়া সমর্থিত ভারতীয় শোধনাগার নাইয়ারা এনার্জি, যার আংশিক মালিকানা রোজনেফটের হাতে ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার পর অন্য সরবরাহকারীরা সরে যাওয়ায় এখন একচেটিয়াভাবে রুশ তেল পরিশোধন করছে। স্থানীয় বাজারে বিক্রি ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে নাইয়ারাকে ভারত যেন সমর্থন অব্যাহত রাখে এটি চায় রাশিয়া।
রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, যা এক সময় রাশিয়ার ভারতের সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা ছিল, জানিয়েছে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত যেসব রুশ তেলের চালান আগে থেকেই চুক্তিবদ্ধ ছিল, সেগুলো তারা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ২০ নভেম্বরের পর যে কোনো চালান এলে তা তারা তাদের এমন শোধনাগারে প্রক্রিয়াজাত করবে, যা স্থানীয় বাজারের জন্য জ্বালানি উৎপাদনের উপযোগী।
আরপি/টিকে