ধূমপানমুক্ত দেশ গড়ার ইতিহাসের অপেক্ষায় সুইডেন

সুইডেনে ২০০৫ সালে দৈনিক ধূমপান করা মানুষের হার ছিল ১৫ শতাংশ। গত বছর তা নেমে এসেছে মাত্র ৫ দশমিক ২ শতাংশে। এবছরে তা ৫ শতাংশেরও কম। পুরো ইউরোপে এরচেয়ে কম অধূমপায়ী নেই কোথাও। 

গালফ নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৫ শতাংশের কম মানুষ ধূমপান করে তাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানমুক্ত বলে ঘোষণা করে। সুইডেন সেই লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি। 

তবে ইউরোপের দেশটির এই সাফল্য একদিনে পরিবর্তন হয়নি। গত দুই দশক ধরে সচেতনতা বৃদ্ধি, ধূমপানের ক্ষতি সম্পর্কিত প্রচারণা এবং কম ক্ষতিকর বিকল্প যেমন প্রচলিত স্নাস ও তামাকবিহীন নিকোটিন পাউচের ব্যবহার দ্বারা সম্ভব হয়েছে।

সুইডেনে মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা অনুযায়ী নিকোটিন গ্রহণের ধরন স্বাস্থ্য প্রভাব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, নিকোটিন নিজেই প্রধান সমস্যা নয়। তাই সুইডেনে গত দশকে ধূমপান হার ৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে, পুরুষদের মধ্যে তামাকজনিত মৃত্যুহার ৩৮ শতাংশ কমেছে এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের হার ৪১ শতাংশ কমেছে।

সুইডেন একমাত্র ইউরোপীয় দেশ যেখানে নিকোটিন পাউচ বাণিজ্যিকভাবে অনুমোদিত এবং এর প্রায় ১৮ শতাংশ জনসংখ্যা ব্যবহার করছে, যা কম ক্ষতিকর পণ্যের প্রতি জনমনের পরিবর্তন নির্দেশ করে।

সুইডেনের মডেলের বিশেষত্ব হলো কেবল ধূমপানের হার কমানো নয়, বরং এটি একটি পদ্ধতিতে করা হয়েছে। কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে কম ক্ষতিকর বিকল্প, বিশেষ করে নিকোটিন পাউচ ব্যবহার করে ধূমপান হ্রাসে সহায়তা করা হয়েছে। যদিও এই বিকল্পগুলি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত নয়, তবে ধূমপানের ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়। ধূমপায়ী কমার ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখছে স্নাস। এটি অনেকটা টিব্যাগের মতো একটি বস্তু, যাতে কাগজের ভেতরে তামাক ভরা থাকে।

সুইডেনের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে সচেতনতা ও নীতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাস্তবসম্মত পরিবর্তন সম্ভব। 

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সেনা সদস্যদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে: সেনাপ্রধান Dec 02, 2025
img
ভোটকে বিলম্বিত করতে কয়েকটি দল ষড়যন্ত্র করছে: সালাহউদ্দিন আহমদ Dec 02, 2025
img
খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে তিন বাহিনী প্রধান Dec 02, 2025
img
আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ওমরাহ যাত্রীদের তথ্য চাইল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় Dec 02, 2025
img
প্রকাশিত হলো বিপিএলের চূড়ান্ত সূচি Dec 02, 2025
img
সরকারি বাসভবন থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন কুকুরছানা ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তা Dec 02, 2025
img
টলিপাড়ায় ফের নীল-তৃণার দাম্পত্যে ফাটলের গুঞ্জন Dec 02, 2025
img
তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে অনেকে অতিআগ্রহী, এত আলোচনার প্রয়োজন নেই: আমীর খসরু Dec 02, 2025
img
টেকসই সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Dec 02, 2025
img
কেবিসির মঞ্চে অমিতাভের সাথে নাচলেন হারমানপ্রীতরা Dec 02, 2025
img
শেষদিকে গোল হজম করে হারলো বাংলাদেশ Dec 02, 2025
img
ঘোমটা দিয়ে ঢাকতে হবে মাথা, বিয়ের আগেই স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন রনদীপ Dec 02, 2025
img
দেশের বাজারে কমানো হলো স্বর্ণের দাম Dec 02, 2025
img
মুজিববাদ ও মওদুদীবাদের বিরুদ্ধে বিএনপি-এনসিপির ঐক্য চান পাটোয়ারী Dec 02, 2025
img
ধূমপানমুক্ত দেশ গড়ার ইতিহাসের অপেক্ষায় সুইডেন Dec 02, 2025
img
সামান্থা-রাজের আধ্যাত্মিক বিবাহ, ভীষণ আড়ম্বরহীন! Dec 02, 2025
img
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস সিইসির Dec 02, 2025
img
আমাদের দেশে চরিত্রবান নেতার অভাব: এটিএম আজহার Dec 02, 2025
img
নাহিদ ইসলামের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Dec 02, 2025
img
বিপিএল নিলামে দল পাওয়া নিয়ে লিটন দাসের মন্তব্য Dec 02, 2025