১৯ দেশের নাগরিকদের অভিবাসন স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তান, মিয়ানমারসহ তৃতীয় বিশ্বের অন্তত ১৯টি দেশের অভিবাসীদের দাখিল করা গ্রিন কার্ড ও মার্কিন নাগরিকত্বসহ সব ধরনের আবেদন স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি। 

নিউ ইর্য়কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সবই ইউরোপীয় অঞ্চলের বাইরের।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত এমন দেশের নাগরিকদের ওপর প্রযোজ্য হবে, যাদের ওপর গত জুনে আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রশাসন অভিবাসনের ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করছে। 

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা তালিকার মধ্যে রয়েছে- আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। জুনে এই দেশগুলোর ওপর প্রায় পুরোপুরি প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। তালিকার বাকি দেশগুলো হলো- বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। এই দেশগুলো জুনের আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প আগ্রাসীভাবে অভিবাসন আইন প্রয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছেন। তিনি ফেডারেল এজেন্টদের যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহরে পাঠিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, উল্লিখিত ১৯ দেশের অভিবাসীদের সব প্রক্রিয়াধীন আবেদন স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, এসব দেশের সব অভিবাসীকে আরও কঠোর পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।  

নতুন নীতির ব্যাখ্যা দিয়ে প্রকাশিত সরকারি স্মারকে বলা হয়, গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় আফগান বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই হামলায় এক গার্ড সদস্য নিহত এবং আরেকজন গুরুতর আহত হন।

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প সোমালি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি তাদের ‘আবর্জনা’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমরা তাদের আমাদের দেশে চাই না।’ 

স্মারকে সাম্প্রতিক কয়েকটি অপরাধের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে, যার জন্য অভিবাসীদের দায়ী করা হয়েছে- এর মধ্যে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলাটিও রয়েছে। এর মধ্যে সম্ভাব্য সাক্ষাৎকার অথবা প্রয়োজন হলে পুনঃসাক্ষাৎকারও অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যাতে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা-সংক্রান্ত সব ঝুঁকি সম্পূর্ণভাবে মূল্যায়ন করা যায়। 

এদিকে, নিউইয়র্ক সিটির আটজন অভিবাসনবিষয়ক বিচারককে গত সোমবার একসঙ্গে চাকরিচ্যুত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। চাকরিচ্যুত হওয়া বিচারকদের প্রত্যেকে লোয়ার ম্যানহাটনের ২৬ ফেডারেল প্লাজায় কর্মরত ছিলেন। চাকরিচ্যুতদের মধ্যে আমিয়েনা এ খান চিফ ইমিগ্রেশন বিচারক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

ইউনিয়ন অ্যান্ড জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের স্বাক্ষরিত একটি নথিতে বলা হয়, দেশব্যাপী ইমিগ্রেশন বেঞ্চের সংস্কারের অংশ হিসেবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইমিগ্রেশন জাজেস চাকরিচ্যুত করার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১৯ দেশের নাগরিকদের অভিবাসন স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র Dec 04, 2025
img

৪ ডিসেম্বর

ইতিহাসের এই দিনে স্মরণীয় যত ঘটনা Dec 04, 2025
জামায়াত মওদুদীবাদে বিশ্বাস করে, ইসলামে বিশ্বাস করে: মির্জা আব্বাস Dec 04, 2025
যুদ্ধের ক্ষত নিয়েও নতুন জীবনের স্বপ্ন, গাজায় ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে Dec 04, 2025
সোমালিয়ার অভিবাসীদের আবর্জনা আখ্যা দিলেন ট্রাম্প Dec 04, 2025
পুঁজিবাদ নয় নারীর পরিচয় ও মর্যাদা নিয়ে কুরআনের নির্দেশনা সর্বোত্তম: খামেনি Dec 04, 2025
ট্রাইব্যুনালে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইলেন ফজলুর রহমান Dec 04, 2025
খালেদা জিয়া মৃত্যুবরন করলে আখিরাতেও একই ধরনের সম্মান পাবে-ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান Dec 04, 2025
শেখ হাসিনার চুক্তি এই আমলেও বহাল কেন? প্রশ্ন বন্দর আন্দোলনের নেতাদের Dec 04, 2025
জনগণের সিদ্ধান্তকে আমরা চূড়ান্ত মেনে নিব; হাসনাত আবদুল্লাহ Dec 04, 2025
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা Dec 04, 2025
এইডস দিবসে সানির ব্যতিক্রমী বার্তা Dec 04, 2025
img
লাইফ সাপোর্টে অভিনেতা তিনু করিম Dec 04, 2025
img
মাগুরায় ২ মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল যুবকের Dec 04, 2025
img
রংপুরের সমাবেশ শেষে ফেরার পথে পিকআপ উল্টে প্রাণ গেল ১ জনের, আহত ৮ Dec 04, 2025
img
বাইসাইকেল কিকে গোল করে মেসিকে কৃতিত্ব দিলেন রোমেরো Dec 04, 2025
img
সংকট নিরস‌নে জরুরি সাহায্যের আহ্বান শ্রীলঙ্কান কমিউনিটির Dec 04, 2025
img
লিডস ইউনাইটেডের কাছে ৩-১ গোলে হারাল চেলসি Dec 04, 2025
img
কিমের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা ‘ভাবছেন’ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট Dec 04, 2025
img

ইউএনওডিসি'র প্রতিবেদন

১০ বছরে মিয়ানমারে আফিমের চাষ সর্বোচ্চে Dec 04, 2025