ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দীর্ঘদিনের দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার প্রচেষ্টায় আরও দৃঢ় সমর্থন চাইতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিলেন। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানায় অ্যাক্সিওস।
গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে আবেদন করেন। তার আগে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র ট্রাম্প গত নভেম্বরেই হারজগকে পূর্ণ ক্ষমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবারের এক ফোনালাপে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন, যেন তিনি ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার প্রচেষ্টায় আরও সাহায্য করেন। ট্রাম্প আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, শেষ পর্যন্ত এই প্রচেষ্টা সফল হবে, তবে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেননি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, “নেতানিয়াহু চান ট্রাম্প আরও কিছু করুক, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই যা করার করতে পারেন সব করেছেন।”
গত মাসে হারজগকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে “রাজনৈতিক, অযৌক্তিক মামলা” বলে উল্লেখ করেন এবং সম্পূর্ণ ক্ষমা দেওয়ার দাবি জানান। সমালোচকরা বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারে এবং ক্ষমাকে রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত করতে পারে।
নেতানিয়াহু প্রথম ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আদালতে বিচারাধীন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে—যেখানে বলা হয়েছে, তিনি বিত্তশালী সহযোগীদের কাছ থেকে বিলাসবহুল উপহার নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন। ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বলেন, মামলা হলো গণমাধ্যম, পুলিশ ও বিচার বিভাগের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র, তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য। ২০২০ সালে শুরু হওয়া মামলাটি বারবার বিলম্বিত হয়েছে এবং আরও কয়েক বছর চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমালোচকদের মতে, নেতানিয়াহু ইসরায়েলের চলমান সংঘাতগুলোকে ব্যবহার করে নিজেকে আইনি ঝুঁকি থেকে রক্ষা করেছেন এবং ক্ষমতায় টিকে আছেন।
ক্ষমার আবেদনে নেতানিয়াহু বলেন, যদি তাকে ক্ষমা করা হয় তবে তিনি ইসরায়েলকে “গুরুত্বপূর্ণ সময়ের” মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব দিতে তার “সমস্ত সময়, সামর্থ্য ও শক্তি” উৎসর্গ করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট হারজগের দপ্তর জানায়, প্রয়োজনীয় সব আইনি মতামত পাওয়ার পর তিনি আবেদনটি পর্যালোচনা করবেন।
সূত্র: আরটি
ইএ/এসএন