বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের জীবন সিনেমার গল্পের চেয়েও বেশি ঘটনাবহুল। বিভিন্ন বিতর্ক ও জেলজীবন পেরিয়ে আসা এই তারকার জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায় এসেছিল ২০২০ সালের আগস্ট মাসে। তখন তার ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ে। এই রোগ নির্ণয় তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যন্ত কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। কারণ ক্যানসারটি ছিল চতুর্থ স্টেজে।
ইউটিউবার রণবীর আল্লহাবাদিয়ার সঙ্গে এক আলাপচারিতায় সঞ্জয় দত্ত তার রোগ নির্ণয়ের সেই মর্মান্তিক মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করেন। অভিনেতা জানান, লকডাউনের সময় সেটি ছিল একটি স্বাভাবিক দিন। তিনি সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর পুরোপুরি হাঁপিয়ে যান। স্নান করার পরেও তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। কী ঘটছে তা তিনি বুঝতে পারেননি। তাই তিনি তার ডাক্তারকে ফোন করেন।
এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, তার ফুসফুসের অর্ধেকের বেশি অংশ জল দ্বারা আবৃত ছিল। সেই জল বের করতে হয়েছিল। ডাক্তাররা আশা করেছিলেন যে এটি যক্ষ্মা হবে। কিন্তু শেষে জানা যায় সেটি ছিল ক্যান্সার।
খবরটি শোনার পর অভিনেতার কেমন প্রতিক্রিয়া হবে, সেই ভয়ে তার বোন তাকে এই দুঃসংবাদটি দেন। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করার পর এই প্রবীণ অভিনেতা দুই বা তিন ঘণ্টা ধরে কেঁদেছিলেন। তবে, তিনি নিজের চেয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন। সেই কারণেই তিনি রোগটিকে পরাস্ত করার জন্য দৃঢ়প্রত্যয়ী হন।
প্রথমে তারা যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু অভিনেতার ভিসা বাতিল হওয়ায় তিনি ভারতেই চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই সময় পরিচালক রাকেশ রোশন তাকে সঠিক চিকিৎসকের সন্ধান পেতে সহায়তা করেন। রাকেশ রোশন নিজেও ২০১৮ সালে গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই তিনি এ বিষয়ে সঠিক ব্যক্তিদের চিনতেন।
সঞ্জয় জানান, চিকিৎসা শুরুর আগে ডাক্তাররা তাকে সতর্ক করেছিলেন যে চুল পড়ে যাওয়া এবং বমির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু দত্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ডাক্তারকে বলেছিলেন, ‘আমার কিছু হবে না।’
অভিনেতা কেমোথেরাপির জন্য দুবাই যেতেন। তা সত্ত্বেও, তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য মানসিক দিক থেকে নিজেকে শক্ত রেখেছিলেন এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাইকেল চালানো ও ব্যাডমিন্টন খেলা চালিয়ে যেতেন।
সঞ্জয় দত্ত ১৯৮১ সালে ‘রকি’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাস্তব’, ‘অগ্নিপথ’ এবং ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’। সর্বশেষ তার অভিনীত স্পাই থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’ মুক্তি পেয়েছে।
ইএ/টিএ