রুক্মিণী মৈত্র যখন দেবকে প্রথমবার নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন, তখন পরিবারের ভেতরে তৈরি হয়েছিল এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি- উত্তেজনা, বিস্ময় আর খানিকটা মজা। কারণ দেব তখন বাংলা ছবির সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়কদের একজন, অথচ রুক্মিণীর বাবা তাকে একেবারেই চিনতেন না।
রুক্মিণীর বাবা সিনেমার মানুষ নন। বরং বলা ভালো, তিনি সিনেমা দেখার অভ্যাসই হারিয়ে ফেলেছিলেন বহু বছর আগে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কিছু ছবি, বা শোলে- এই কয়েকটি ক্লাসিক ছাড়া নতুন যুগের কোনও সিনেমাই তার চোখে পড়েনি। নায়কের নাম, ছবির সাফল্য, আলোচিত তারকা- এসব তার বাইরের জগৎ। তাই দেব তার সামনে দাঁড়িয়েও কোনও সেলিব্রিটি পরিচয়ের ভার অনুভব করাতে পারেননি।
এই অজানা পরিচয়ের মাঝেই গড়ে উঠেছিল এক সরল, স্বাভাবিক আলাপচারিতা। দেব নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন একেবারে সহজভাবে- দীপক অধিকারী হিসেবে। বলেছিলেন, তিনি প্রকৌশলবিদ্যায় পড়েছেন, সামনে রাজনৈতিক পথচলার পরিকল্পনাও রয়েছে। এসব কথা শুনে রুক্মিণীর বাবারও আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, কারণ তিনি রাজনীতির বিষয়গুলো খুব ভালো বোঝেন। অভিনেতা না, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই দেব তার সঙ্গে কথা বলেছেন- এটিই রুক্মিণীর পরিবারের কাছে আজও স্মৃতিমধুর।
সেদিনের সেই দেখা কোনও তারকাখ্যাতি কিংবা উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল না। বরং আর পাঁচটা পরিচয়ের মতোই ছিল সহজ, স্বচ্ছ আর সাধারণ। এই সরলতাই নাকি রুক্মিণীর পরিবারকে দেবের প্রতি আরও কাছাকাছি করে দিয়েছিল। আর দেবও বুঝেছিলেন, খ্যাতির জগৎ যতই বড় হোক, পরিবারের ভেতরের এই স্বাভাবিকতা এবং আন্তরিকতার মূল্যই সবচেয়ে বেশি।
কেএন/টিকে