সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নয়, ধানের শীষ মুখ্য : তারেক রহমান

সংসদ নির্বাচনে ‘প্রার্থী নয়, ধানের শীষ মুখ্য’ বলে দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের বসে থাকার সময় নেই। বিভিন্ন এলাকায় আমাদের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। হয়ত এমনও হতে পারে আপনার এলাকায় যেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে, হয়ত আপনি যাকে পছন্দ করতেন সে পায়নি। যে পেয়েছে তার সঙ্গে হয়ত আপনার সম্পর্ক আছে, একটু কম।’

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজনে এ অনুষ্ঠান হয়। বিজয়ের মাস উপলক্ষ্যে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সারা দেশের ৭৫টি ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের এক হাজারের বেশি নেতা এতে অংশ নেন।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, তুমি তো প্রার্থীর জন্য কাজ করছো না, তুমি তোমার ধানের শীষের জন্য কাজ করছো। এখানে প্রার্থী মুখ্য নয়, এখানে মুখ্য হচ্ছে তোমার দল বিএনপি, এখানে মুখ্য হচ্ছে ধানের শীষ, এখানে মুখ্য হচ্ছে দেশ। মানুষ ধানের শীষের পক্ষে রায় দিলে দেশ গড়ার প্রত্যেকটা পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব এবং করব।

তারেক রহমান আরও বলেন, দেশ গড়ার পরিকল্পনাগুলো… এগুলো আমরা পরিকল্পনার মধ্যে রাখবো না। এগুলোকে আমরা যেকোনো মূল্যে ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়ন করব জনগণের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে। আমাদের আজকে প্রতিজ্ঞা, আজকের কর্মপন্থা হলো এই পরিকল্পনাগুলোর সঙ্গেই আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করবো। এটাই হচ্ছে আমাদের পরবর্তী দুই মাসের কাজ। এর বাইরে আর কোনো কাজ নেই।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের দেশ গড়ার পরিকল্পনাগুলোর নিয়ে নিজ নিজ এলাকার মানুষকে সম্পৃক্ত করা, সমর্থন নেওয়া ও সমর্থন জোগাড় করার জন্য আহ্বান জানান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

খাল খনন, বায়ু দূষণ রোধ, পরিবেশের উন্নয়ন, বর্জ্য অপসারণ, সারাদেশে ক্রীড়ার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূর, ফ্যামিলি কার্ড, ফার্মার্স কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ডসহ বিএনপির পরিকল্পনাসমূহ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে নেতা-কর্মীদের তা জনগণের দোরগৌড়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন তারেক রহমান।

‘বিশেষ একজন ছাড়া সবাই খারাপ.. এটার পরিবর্তন জরুরি’
তারেক বলেন, গত ১৬ বছর ধরে ‘আমি ভালো আর সব খারাপ’ এরকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি। দুঃখজনক হলেও ২৪ সালের ৫ তারিখের পরে কেন জানি মনে হচ্ছে সেটির বোধহয় পরিবর্তন হয়নি। এটির পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়, এটির পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, আমরা বহু দলীয় গণতন্ত্রের বিশ্বাসী। বহুদলীয় গণতন্ত্রে মানুষ বিভিন্ন মতামত দেবে, মতামত দেওয়ার অধিকার তার আছে, বক্তব্য দেওয়ার অধিকার তার আছে। কিন্তু বিশেষ একজন ভালো আর বাকি সবাই খারাপ এটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে। এই ধারণার পরিবর্তন হতে হবে। এটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, এটা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

‘নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নাই’
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। কেন নেই? বিগত যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। কেন আন্দোলন করেছি? কারণ সেখানে কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। মানুষ বেঁচে আছে কি মরে যাচ্ছে তার কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। একমাত্র গণতন্ত্র সমাজে দেশে এবং রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে একমাত্র নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকার।

২৪ এর ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড এদেশের জনগণ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের মানুষ মাস্টারমাইন্ড আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে দেশের মানুষ। একজন গৃহবধূ পাঁচ তারিখের সেই আন্দোলন মাস্টারমাইন্ড, মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে, দেশের মুদি দোকানদার, ক্ষুদ্র দোকানদার, রিকশাচালক, ভ্যান চালক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক, বাসের হেলপার, ছাত্র, জনতা, মাদ্রাসার ছাত্র, ইউনিভার্সিটি কলেজ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিসহ স্কুল কলেজের ছাত্ররা। ওই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড ছোট ছোট শিশুরা… ওই আন্দোলনে ৬৩ জন শিশু মারা গেছে।”

‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’
তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ইমিডিয়েট ভবিষ্যৎ তোমাদের উপরে বাংলাদেশের সামনের দিনে মুভিং ফরওয়ার্ড সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে। তোমরা যদি এগিয়ে আসো, তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হও তাহলে এদেশের সামনে একটি ভবিষ্যৎ আছে।”

‘‘তা না হলে একটি ভয়াবহ কিছু হয়ত অপেক্ষা করছে। আমরা যদি আজকে ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা যদি যে যার অবস্থান থেকে কাজ করি দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আজকে আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই।”

‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় বিএনপির নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মা হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শুটিং সেটে কিয়ারা Dec 08, 2025
img
নতুন রূপে ফিরছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস Dec 08, 2025
img
আসছে ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর সিক্যুয়াল Dec 08, 2025
img
আলোচিত মহিলা লীগ নেত্রী মহুয়া আটক Dec 08, 2025
img
'সৌভাগ্যবতী' হিসেবে নিজেকে অভিহিত করলেন ঋতুপর্ণা Dec 08, 2025
img

‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’

ফেরদৌসের পর ছবিটি থেকে বাদ পড়লেন পপি Dec 08, 2025
img
‘জুলাই কন্যা সম্মেলন’ বুধবার Dec 08, 2025
img
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল Dec 08, 2025
img
১০০ কোটির ক্লাবে রণবীরের ‘ধুরন্ধর’ Dec 08, 2025
img
চীনের কাছে ভারতীয়দের নিশানা না করার আশ্বাস চায় ভারত Dec 08, 2025
img
'বিগ বস ১৯’ জিতে বিপুল অর্থ আয় করলেন অভিনেতা গৌরব খান্না Dec 08, 2025
img
বিগ বসের মঞ্চে ধর্মেন্দ্রকে শ্রদ্ধা জানালেন সালমান খান Dec 08, 2025
img
ব্যাংক খাতে একই সময়ে দুই বিপরীত চিত্র Dec 08, 2025
img
আমরা ইতিমধ্যে ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছি : এনবিআর চেয়ারম্যান Dec 08, 2025
img
বিএনপির সঙ্গে জোট এখনো চূড়ান্ত নয় : রাশেদ খাঁন Dec 08, 2025
img
মাগুরায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫০ Dec 08, 2025
img
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নয়, ধানের শীষ মুখ্য : তারেক রহমান Dec 08, 2025
img
বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রত্যয় বাংলাদেশের Dec 08, 2025
img
সন্ধ্যার পরে ঢাবি ক্যাম্পাসে মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা Dec 08, 2025
img

ইসির সঙ্গে বৈঠক

জাতীয় নির্বাচনের তারিখ দ্রুত ঘোষণার দাবি জামায়াতের Dec 08, 2025