নিকুঞ্জ–২ এর ব্যস্ত সড়কে স্বাভাবিক সন্ধ্যা হঠাৎ ভয়াল নাটকে পরিণত হয়, যখন স্পাইসি হোটেলের সামনে দাঁড়ানো ব্যবসায়ী জিয়াউল মাহমুদকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মুহূর্তের মধ্যে কালো হাইয়েসে তুলে নেয়। জানা গেছে, এই অপহরণের নেতৃত্ব দিচ্ছিল এলাকার কুখ্যাত ত্রাস ‘গুন্ডা জসিম’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জসিমের এই ভয়ংকর কার্যকলাপকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছিল স্থানীয় বিএনপি’র এক যুগ্ম আহবায়ক। তাঁর সক্রিয় সমর্থনে গুন্ডা জসিম দীর্ঘদিন ধরে জামতলা টানপাড়া নিকুঞ্জ এলাকায় ভয়ের এক রাম রাজত্ব কায়েম করেছিল।
বিশেষ করে কথিত সেই যুগ্ম আহবায়কের ভাড়াটে লাঠিয়াল ছিল এই জসিম। যখন তখন যে কাউকে ধরে বা তুলে আনতে গুন্ডা জসিমের কোন বিকল্প ছিল না।
সোমবারে চোখের পলকে সংঘটিত এই অপহরণ ছিল নিখুঁত পরিকল্পনা ও ঠান্ডা মাথার বাস্তবায়নের এক ভয়ঙ্কর উদাহরণ। এলাকাবাসীর ভাষায়—” রাতের অন্ধকারকে হাতিয়ার করে জসিম পুরো এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি, দখলদারি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ফজলে রাব্বি এ প্রতিবেদককে বলেন, “এটি ছিল অত্যন্ত সুগঠিত ও পূর্বপরিকল্পিত অপারেশন। অপহরণকারীরা ব্যবসায়ীকে গুম করে ভয় ও দখলদারির বার্তা ছড়াতে চেয়েছিল—এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।”
খিলক্ষেত থানা পুলিশ দ্রুত প্রযুক্তিগত নজরদারির মাধ্যমে গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করে এবং আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় ৭ জনকে—জসিম (এলাকায় ‘গুন্ডা জসিম’ নামে পরিচিত), মোঃ ফারুক হোসেন, মাহবুব মুন্সী, অনিক, মোঃ আলমগীর হোসেন, মাহাদী সরকার রাকিব এবং শিল্পী আক্তার ওরফে রানী। তাদের সহযোগী পলাতক রাজা মিয়া তারেক আজিজসহ বাকি সদস্যদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
অপরাধীদের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং-০৯ ,তারিখ-০৯/১২/২০২৫,ধারা- ৩৬৫/৩৪ পেনালকোড।
গুন্ডা জসিমের গ্রেফতারে এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করে বলছেন, “বছরের পর বছর নিকুঞ্জ এলাকায় যে ত্রাস দিনের আলো ও রাতের আঁধারে রাজত্ব করত, অবশেষে তার মুখোশ খুলে গেছে।” পুলিশের এই দ্রুত অভিযান দেখিয়েছে—অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক, আইন তার চেয়েও শক্তিশালী।
এসএন