“সময়মত নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহর ও কমিশনারেট কার্যালয়ে উদযাপন আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) উদযাপিত হবে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ নিশ্চিত করতে ভ্যাট প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ লাখ প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার কাজ করছে প্রতিষ্ঠাটি।
ভ্যাট দিবসের পাশাপাশি ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ কর্মসূচি নিয়েছে এনবিআর। এরমধ্যে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে সেমিনার আয়োজন রয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওস্থ রাজস্ব ভবন সেমিনারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট দিবসের গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী ১০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপি বিশেষ নিবন্ধন ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। যার উদ্দেশ্য হবে ১ লাখ নতুন ভ্যাট নিবন্ধন নিশ্চিত করা। বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ লাখ ৪৪ হাজার। বিগত অর্থবছরে এনবিআর মোট আদায়ের ৩৮ শতাংশ ভ্যাট হতে আদায় করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে।
দিবসকে সামনে রেখেএনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, “আগামী বছর এমন এমন ম্যাকানিজম চালু করব আয়করের মতো; চাইলেও আর ভ্যাট নিবন্ধন ব্যতীত কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ লাখ প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। ভ্যাট নেট এখনো খুবই ছোট এবং প্রচুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ছাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে। চলতি মাসেই এক লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “চলতি মাসের মধ্যে এক লাখ নতুন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান বাড়াবে। সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা, সেটা হচ্ছে আমাদের ভ্যাট পেমেন্ট যারা করে, যাদের হাত দিয়ে ভ্যাট পেমেন্ট হয়—বিশেষ করে ব্যবসায়ীগণ—তাদের যে ভ্যাট নেট, এই ভ্যাট নেটটা যথেষ্ট ছোট।”
এনবিআর বলছে, ভ্যাট আদায় ব্যবস্থাপনা জোরদার করার মাধ্যমে ভ্যাটের আদায় উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি করে দেশের আর্থিক বুনিয়াদ মজবুত করা সম্ভব। ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে নানামুখি চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন অনিবন্ধিত ব্যবসা, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের অভাব, রেয়াত-শৃঙ্খল কার্যকর না হওয়া, অতিরিক্ত অব্যাহতি, ম্যানুয়াল অডিট ব্যবস্থা, ই-কমার্স ও উদীয়মান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করতে না পারা প্রভৃতি।
এক সময়ে বছরের ১০ জুলাই জাতীয় ভ্যাট দিবস পালিত হতো। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে মূসক প্রবর্তিত হওয়ার পর এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ২০১১ সাল থেকে দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। আর ২০১৩ সাল থেকে দিবসের পাশপাশি ১০-১৫ ডিসেম্বর "ভ্যাট সপ্তাহ" উদযাপন করা হচ্ছে। ভ্যাট সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেশের সব মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে গ্রাহকদের ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে। রেডিও, টেলিভিশন, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এবি/টিকে