শর্করা ভেঙে শক্তি উৎপাদন, গ্লুকোজ তৈরি এবং শরীরকে দূষিত পদার্থ মুক্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সব ভূমিকা পালন করে লিভার। এটি খাবার সঠিকভাবে হজম করতে এবং শোষণ করতে সহায়তা করে। তাই লিভার সুস্থ রাখা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক। লিভারের কর্মক্ষমতা হ্রাস হলে তা থেকে লিভারের রোগ, বিপাকীয় ব্যাধি এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে।
অনেক খাবার ও পানীয় রয়েছে, যা লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করতে পারে। তাই দেহ ও লিভার সুস্থ রাখার জন্য চিনে নিন এমন কিছু খাবার, যা আপনাকে সুস্থ রাখবে।
চলুন জেনে নিই, লিভারের জন্য উপকারী খাবার সমূহ-
কফি
কফিকে লিভারের পক্ষে স্বাস্থ্যকর বলে মনে হয়, বিশেষত এটি ফ্যাটি লিভার ডিজিজের মতো সমস্যা থেকে রক্ষা করে। দৈনিক কফি পান করলে তা আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগ সমূহের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করবে। এটি লিভার ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের হাত থেকেও রক্ষা করতে পারে।
গ্রিন-টি
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির ওয়ার্ল্ড জার্নালের একটি সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, গ্রিন-টি সামগ্রিক মেদযুক্ত উপাদান হ্রাস করতে, মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের (এনএএফএলডি) লক্ষণগুলি হ্রাস করতে কার্যকর।
মাছ
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির ওয়ার্ল্ড জার্নালের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, চর্বিযুক্ত মাছ এবং ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট সেবন করা এনএএফএলডি-র মতো লিভারের অসুখের প্রভাব হ্রাস করতে পারে। চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্যকারী। এই চর্বিগুলি যকৃতের পক্ষে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে, কারণ এগুলি অতিরিক্ত মেদ গঠনে বাধা দেয় এবং লিভারে এনজাইমের মাত্রা বজায় রাখে।
বাদাম
একই সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, বাদাম খাওয়া লিভারকে সুস্থ রাখার এবং এনএএফএলডি থেকে রক্ষা করার একটি সহজ উপায়। বাদামে সাধারণত অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই যৌগগুলি এনএএফএলডি প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রদাহনাশ করতে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম খাওয়ার অভ্যাস লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করবে। বাদামের ক্যালোরি বেশি থাকায় খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
রসুন
লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য উত্তম খাবার রসুন। এর এনজাইম লিভারের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান পরিষ্কার করে। এতে আছে আরও দুটি উপাদান যার নাম এলিসিন ও সেলেনিয়াম। যা লিভার পরিষ্কার রাখে এবং ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান হতে রক্ষা করে।
জলপাই তেল
অত্যধিক চর্বি খাওয়া লিভারের পক্ষে ভালো না, তবে কিছু চর্বি উপকারী। গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির ওয়ার্ল্ড জার্নালের সমীক্ষা অনুসারে, খাদ্যতালিকায় জলপাইয়ের তেল যুক্ত করলে তা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করতে এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
আঙ্গুর
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির ওয়ার্ল্ড জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে- আঙ্গুর, আঙ্গুরের রস এবং আঙ্গুর বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ হ্রাস এবং লিভারের ক্ষতি রোধ করে লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে
টাইমস/এনজে/জিএস