চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে সংঘটিত সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর থেকেই চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। প্রায়ই পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে চির বৈরী এ দুই দেশের নেতা ও শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে।
সংক্ষিপ্ত সেই যুদ্ধের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও দুদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার কোনও নাম নেই। উল্টো সেই যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে আবারও ঝাঁঝালো বক্তব্য দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) খাইবার পাখতুনখাওয়ার হারিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, এপ্রিল-মে এর সংঘাতে মোদি নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে পাকিস্তান।
তার ভাষায়, পাকিস্তান-ভারত সংঘাতে আমরা মোদি সরকারকে এমন এক শিক্ষা দিয়েছি, যা তারা কোনোদিন ভুলতে পারবে না।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কা-ই-হক’ বা ‘সত্যের যুদ্ধে’ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী জাতির দোয়া ও অটল সমর্থনের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছে। দিল্লি থেকে মুম্বাই— পুরো ভারতই এই পরাজয় কখনো ভুলবে না।
এ সময় শাহবাজ শরিফ খাইবার পাখতুনখাওয়াকে সাহসী, দৃঢ়চেতা ও বীরদের ভূমি উল্লেখ করেন এবং সেখানকার জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের ত্যাগের কারণেই দেশে শান্তি ফিরে এসেছে।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাদুবিদ্যা’ নয়, বরং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।
তিনি জানান, অর্থনীতি সংকটময় অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে স্থিতিশীলতার পথে রয়েছে এবং এখন এটিকে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, চারটি প্রদেশই যখন উন্নয়ন করবে, তখনই দেশ এগোবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও পাকিস্তান তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর ২৩ এপ্রিল ভারত একের পর এক বৈরী পদক্ষেপ নেয়। যার মধ্যে ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি (আইডব্লিউটি) স্থগিত করে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশন বন্ধের নির্দেশ দেয় এবং উভয় দেশের দূতাবাসে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনে।
আইকে/টিএ