রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আল-শাইবানী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এত সামরিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বৈঠকে সামরিক শিল্প খাতে কৌশলগত সহযোগিতা সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় উঠে এলেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আলোচনার মধ্যে ছিল সিরীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে সামরিক সহযোগিতা জোরদার, আধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম উন্নয়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে যৌথ কাজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুপক্ষ এমনভাবে সামরিক ও কারিগরি অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মতবিনিময় করেছে, যাতে সিরীয় আরব সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সামরিক শিল্পের আধুনিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা যায়।
সামরিক বিষয় ছাড়াও বৈঠকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে আলোচনা হয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে দামেস্ক ও মস্কোর মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমন্বয় বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সিরিয়া-রাশিয়া সহযোগিতা বাড়ানো, পুনর্গঠন প্রকল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এ সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন সিরিয়ার প্রতি রাশিয়ার ‘অটল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশটির ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থনের কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বারবার হামলার নিন্দা করে একে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই সফরটি গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের রাশিয়া সফরের সর্বশেষ উদ্যোগ। প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় আসাদ সরকারের অন্যতম প্রধান মিত্র ছিল রাশিয়া, যা সামরিক সহায়তা ও বিমান হামলার মাধ্যমে তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
আসাদ ও তার পরিবার ক্ষমতা হারানোর পর রাশিয়ায় আশ্রয় নিলেও মস্কো বর্তমানে দামেস্কের নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত খমেইমিম বিমানঘাঁটি ও তারতুস নৌঘাঁটি ব্যবহারের চুক্তি বহাল রাখার বিষয়ে রাশিয়া আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এর আগে অক্টোবরে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রাশিয়া সফর করে জানান, দামেস্ক ও মস্কোর মধ্যে অতীতে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি তার সরকার সম্মান করবে। ওই সময় পুতিন বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে আলোচিত ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় উদ্যোগ’ বাস্তবায়নে রাশিয়া প্রস্তুত।
এসএস/এসএন