কেন বিয়ে করেননি রতন টাটা, জানালেন নিজেই

জীবনের তত্ত্ব ও দর্শন মানুষ ভেদে একেক রকম। কারো কাছে জীবন মানেই যুদ্ধ। কেউ মনে করেন জীবনের তৃপ্তটা শুধু প্রেমে। আবার একেবারে মাপা কাটা জীবনযাপনের গল্পও নতুন কিছু নয়। একেক মানুষের জীবনের গল্প একেক রকম। সেই গল্প কেউ প্রকাশ করেন আবার কেউ সেই গল্পকে লুকিয়ে রাখেন অন্তরের খুব গভীরে। বিশেষ করে বহুল আলোচিত ও পরিচিত খ্যাতিমান মানুষগুলোর ব্যক্তিগত জীবনের অধিকাংশ গল্পই থাকে লোকচক্ষুর অন্তরালে।

কিন্তু সব ধরণের অন্তরাল ভেঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের বহুল আলোচিত প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ্যে আনলেন ভারতের সফল ব্যবসায়ী ও টাটা সন্সের চেয়ারম্যান রতন টাটা।

সম্প্রতি তিনি তার বিয়ে না করার কারণটি নিজের মুখেই প্রকাশ করেছেন। কোনও রকম রাখঢাক ছাড়াই জানিয়ে দিয়েছেন সঙ্গীবিহীন জীবনের ৮২টি বসন্ত পার হওয়ার গল্প।

যৌবনকালে কোনো একজনকে ভালো লাগলেও তা পূর্ণতা না পাওয়ার কথা রতন টাটা এর আগেই জানিয়েছিলেন। তবে এবার তিনি সেই সম্পর্ক নিয়ে ‘হিউম্যানস অব বোম্বে’ নামের একটি ফেসবুক পেজে মুখ খুলেছেন। ওই পেজে বাবা-মায়ের ডিভোর্স নিয়েও কথা বলেন রতন টাটা।

রতন টাটা লিখেছেন, বেশ হাসিখুশিই ছোটবেলা কেটেছে আমার। বড় হতেই দেখতে হলো বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ। তখনকার দিনে বিয়ে বিচ্ছেদের খুব একটা চল ছিল না। কিন্তু আমার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর দাদি আমার দায়িত্ব নেন। মা ফের বিয়ে করলেন। আর এ নিয়ে স্কুলে বন্ধুদের কাছে আমাকে অনেক কটু কথা শুনতে হতো। কিন্তু দাদি আমাকে মূল্যবোধ ধরে রাখতে শিখিয়েছিলেন।

রতন টাকা আরও লিখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লন্ডনে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম। বেশ মনে আছে, আমার ও ভাইয়ের মধ্যে মূল্যবোধ গেঁথে দিয়েছিলেন দাদি। সবসময় বলতেন, এটা বলবে না, এটা করবে না, সম্মানটাই বড়। উনি সবসময় আমার পাশে থেকেছেন।

বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে টাটা লিখেছেন, ছোটবেলায় ভায়োলিন শিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাবা পিয়ানো শিখতে বলেন। আমি স্থপতি হতে চেয়েছিলাম, বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন প্রকৌশলী হই। আমি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে চেয়েছিলাম, বাবা আমাকে জোর করে ব্রিটেনের কলেজে পড়তে পাঠালেন। কিন্তু সেই সময় দাদি আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেল কলেজে ভর্তি হতে সাহায্য করলেন।

এরপর রতন টাটা তার ভালোবাসার মানুষের কথা স্মরণ করে লিখেছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে একজনের প্রেমে পড়েছিলাম। বিয়েটা প্রায় হয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু দাদির অসুস্থতার কারণে দেশে ফিরতে বাধ্য হলাম। ভেবেছিলাম, ভালোবাসার মানুষটি ভারতে চলে আসবেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে ইন্দো-চীন যুদ্ধের কারণে তার (রতন টাটার প্রেমিকা) পরিবার তাকে ভারতে আসতে দেয়নি। এভাবে সম্পর্কটা ভেঙ্গে যায়। আর এই সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পর আর কোনো সম্পর্কে মন জমাতে পারেননি রতন টাটা। তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়া ওয়েস্ট

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ