দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন ছিন্ন করে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কেবল দেশের ভেতরেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রয়টার্স, এএফপি এবং বিবিসির মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলো তার ফেরাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে, যেখানে তাকে বাংলাদেশের আগামী দিনের নেতা বা সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
বিমানের চাকা যখন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে, তখন ৬ হাজার ৩১৪ দিনের অপেক্ষার অবসান ঘটে। স্ত্রী জোবায়দা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সাথে নিয়ে তিনি যখন বিমান থেকে নামেন, তখন পুরো দেশ যেন এক নতুন রাজনৈতিক গন্তব্যের ইঙ্গিত পায়। বিশ্ব গণমাধ্যমের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের ক্ষমতার সমীকরণ সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অত্যন্ত ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারী। রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করেছে— নির্বাচনের আগে নির্বাসন থেকে ফিরলেন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী। সংবাদ সংস্থাটি বলছে, তারেক রহমানের এই ফেরা তার সমর্থকদের মধ্যে অভূতপূর্ব উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে এবং তিনি এখন প্রধানমন্ত্রী পদের প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বী।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির শিরোনাম ছিল— সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই উত্তরসূরি বিপুল জনসমর্থন আর উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে দেশে ফিরেছেন, যা আগামী নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করে শিরোনাম করেছে— ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। বিবিসিতে বলা হয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে থাকা তারেক রহমানই হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রনায়ক।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই ফেরা কেবল একটি সাধারণ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নয়, বরং এটি বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রে ফেরার একটি বড় ধাপ। বিশ্বের অধিকাংশ শক্তিশালী গণমাধ্যম মনে করছে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আগামী নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল। ১৭ বছরের মামলা, হামলা আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে তার এই রাজকীয় প্রত্যাবর্তনকে ‘পরিবর্তনের প্রতীক’ হিসেবে দেখছে বিশ্ব সম্প্রদায়।
আইকে/টিএ