ইউরোপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত পর্তুগাল। দীর্ঘদিন ধরে তুলনামূলক শান্ত ও মধ্যপন্থি রাজনীতির জন্য পরিচিত এই দেশটি এবার দাঁড়িয়ে আছে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড়ে। আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে কট্টর ডানপন্থি দল চেগা।
২০১৯ সালে আত্মপ্রকাশ করা চেগা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। দলটির মূল হাতিয়ার— অভিবাসী বিরোধী বক্তব্য, কঠোর আইনশৃঙ্খলা আর তথাকথিত জাতীয় পরিচয় রক্ষার রাজনীতি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশটির কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দল চেগা তাদের অভিবাসীবিরোধী প্রচারণা আরও জোরদার করেছে। নির্বাচনী মাঠে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে দলটি অভিবাসন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র বক্তব্য ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
সেগা দলটির নেতারা দাবি করছেন, অবৈধ অভিবাসন পর্তুগালের সামাজিক নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও জাতীয় পরিচয়ের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী সমাবেশ ও গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তারা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করা, অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপ এবং অভিবাসীদের জন্য দেওয়া কিছু রাষ্ট্রীয় সুবিধা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছেন।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চেগার এই প্রচারণা মূলত জনমনে অসন্তোষ ও উদ্বেগকে কাজে লাগানোর কৌশল। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো পর্তুগালেও অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক বাড়লেও দেশটির অর্থনীতিতে অভিবাসীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ বলে মত অনেক বিশেষজ্ঞের।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো চেগার বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের প্রচারণা সমাজে বিভাজন বাড়াতে পারে এবং অভিবাসী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এদিকে ক্ষমতাসীন ও মধ্যপন্থি দলগুলো অভিবাসন ইস্যুতে তুলনামূলক সংযত অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, মানবিক মূল্যবোধ ও আইনের শাসন বজায় রেখেই অভিবাসন ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব।
নির্বাচনের তারিখ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই অভিবাসন প্রশ্নটি পর্তুগালের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসছে। ভোটাররা শেষ পর্যন্ত কোন দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন দেন, সেদিকেই এখন তাকিয়ে দেশটির রাজনৈতিক মহল।
এবি/টিকে