সারা বিশ্বের ৮১টি দেশ থেকে চলতি ২০২৫ সালে ২৪ হাজার ছয়শর বেশি ভারতীয় নাগরিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে এক বছরে ১১ হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিককে বহিষ্কার করে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে সৌদি আরব।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।
ইরানের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-ইউরোপইরানের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-ইউরোপ
এর বিপরীতে সারা বছর আলোচনায় থাকলেও মাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র পুরো বছরে মোট তিন হাজার আটশ ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে।
তবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে দেশটি থেকে ভারতীয়দের বহিষ্কারের সংখ্যা এটিই সর্বোচ্চ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক ধরপাকড় ও ভিসার অনুমোদিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত অবস্থানের ফলে এ বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। আমেরিকা থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিন হাজার ৪১৪কে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২৩৪ জনকে বহিষ্কারের মাধ্যমে হিউসটন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বহিষ্কৃতদের বেশিরভাগই বেসরকারি চাকরিজীবী ছিলেন বলে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শিক্ষার্থী বহিষ্কারের হিসাব অনুসারে চলতি বছর ব্রিটেন থেকে সর্বোচ্চ ১৭০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়। ১১৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অপরদিকে রাশিয়া থেকে ৮২ ও আমেরিকা থেকে ৪৫ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
সৌদি আরব থেকে বহিষ্কৃত ১১ হাজার ভারতীয় নাগরিকের বেশিরভাগই স্বল্প দক্ষ শ্রমিক বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়। এসব শ্রমিক নির্মাণশিল্প, গৃহস্থলী ও পরিচর্যার কাজে যুক্ত ছিলেন। ভুল তথ্য দেওয়া বা জনশক্তি রপ্তানিকারী ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জালিয়াতির কারণে এসব শ্রমিককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই এক হাজার ৫৯১ ভারতীয়কে বহিষ্কার করে মিয়ানমার তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়া এক হাজার ৪৮৫, সংযুক্ত আরব আমিরাত এক হাজার ৪৬৯, বাহরাইন ৭৬৪, থাইল্যান্ড ৪৮১ ও কম্বোডিয়া ৩০৫ ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ভিসার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় অবস্থান, যথাযথ পারমিট ছাড়া কাজে যুক্ত হওয়া, শ্রম আইন লঙ্ঘন করা ও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ভারতীয়দের বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া জনশক্তি রপ্তানি কোম্পানিগুলোর জালিয়াতির শিকার হয়েও ভারতীয় শ্রমিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া মিয়ানমার ও কম্বোডিয়ার ক্ষেত্রে সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়ে দেশগুলোতে গিয়ে ‘সাইবার দাস’ হওয়া ভারতীয়দের বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থের বেতনের লোভ দেখিয়ে সাইবার জালিয়াত গোষ্ঠী ভারতীয়দের প্রলুব্ধ করে দেশগুলোতে নিয়ে যায়।
সেখানে গিয়েই ফাঁদে পড়েন তারা। নানা ধরনের অবৈধ কাজে বাধ্য হন তারা। এ ধরনের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই এক সময় তারা গ্রেপ্তার হয়ে বহিষ্কার হন।
এমআর/টিকে