তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিনিয়োগকারীদের একটা কনফিডেন্স বুস্টার: বিডা চেয়ারম্যান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন।

তার ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা সিগন্যাল দেয় যে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধবতার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ; বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা কনফিডেন্স বুস্টার। গত সপ্তাহে আরও একটা ভালো ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে: বাংলাদেশ-জাপান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ)।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বা ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) আবশ্যক। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বি দেশগুলো এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। ভিয়েতনামের এমন চুক্তি আছে প্রায় ৫০টি দেশের সঙ্গে, কম্বোডিয়ার আছে প্রায় ২০টি দেশের সঙ্গে। আর আমাদের এমন কম্প্রিহেনসিভ এগ্রিমেন্টের সংখ্যা শূন্য। আমরা এই গোল্ডেন ডাক ব্রেক করতে যাচ্ছি জাপানের সঙ্গে ইপিএ করে। গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে নেগোশিয়েশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ধাপসমূহ সম্পন্নের পর এটি কার্যকর হবে।

তার ভাষ্যে তিন কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এটা বিশাল একটি পদক্ষেপ। তা হলো-

বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান
বিনিয়োগকারীরা ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে অপারেট করতে পছন্দ করে। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো সেই ফ্রেমওয়ার্কটা তৈরি করেছে এফটিএ বা ইপিএ-র মাধ্যমে। আমাদের এগুলো না থাকার কাফফারা হিসেবে জাপানের উদাহরণ দেওয়া যায়। এত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়া সত্বেও বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ গত ৫৪ বছরে হয়েছে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার। এই ইপিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাপানি বিনিয়োগকারীরা পলিসি কনটিনুইটি, লিগ্যাল জুরিসডিকশন, এমএফএন, ইত্যাদি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাবে। আগামী দিনে বিনিয়োগ শুধু পরিমাণে নয়, বৈচিত্র্য ও গুণগত মানেও বহুগুণে বাড়বে। জাপান হতে বিশেষ কিছু খাতে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে, আইটি ও ডিজিটাল সেবা, লজিস্টিকস ও সাপ্লাই চেইন, ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোটিভ যন্ত্রাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষি/অ্যাগ্রো-প্রসেসিং। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।

জাপানে আমাদের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার
বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রথম দিন থেকেই পোশাকসহ ৭,৩৭৯ টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পক্ষান্তরে, জাপান ১,০৩৯ টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। সেবা বাণিজ্য খাতেও উভয় দেশ উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাতে ৪টি মোডে সার্ভিস উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে জাপান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোর একটা বড় সমাধান হচ্ছে দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে ইম্পর্ট্যান্ট দেশগুলোর সঙ্গে এই চুক্তি সম্পন্ন করা। অন্যান্য দেশে এসব এফটিএ/এপিএ নেগোসিয়েশনের জন্য সরকারে স্পেশালিস্ট এক্সপার্ট টিম থাকে। আমরা প্রথমবারের মতো একটা সলিড দল তৈরি করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমেরিকা, কোরিয়া, তুরস্ক, ইত্যাদি দেশের সঙ্গে অলরেডি কথা শুরু হয়েছে। এই দলটা কিছুদিনের মধ্যেই ঝানু নেগোসিয়েটরে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালে আমরা চেষ্টা করেছি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে বেসিক কিছু ট্র্যাক সেট করা। আশা করছি আগামী সরকার এই ভীত গড়ার উদ্যোগ থেকে উপকৃত হবে এবং দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

এসএস/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘প্রিয় জেবুকে’ নিয়ে জাইমা রহমানের ফেসবুক পোস্ট Dec 29, 2025
img
সিলেট থেকেই নির্বাচনী কাজ শুরু করবেন তারেক রহমান Dec 29, 2025
img
ঢাকায় তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে! Dec 29, 2025
img
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত চুয়াডাঙ্গার জনজীবন Dec 29, 2025
বলিউডে প্রেম ও পারিবারিক চাপের কাহিনী Dec 29, 2025
img
প্রধান শিক্ষকের ভুলে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া হলো না ১০ শিক্ষার্থীর Dec 29, 2025
img
মাদক ও চোরাচালানে সহযোগিতা করলে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 29, 2025
img
দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে কুয়াশা দাপট, মেঘলা থাকবে আকাশ Dec 29, 2025
img
সিরাজগঞ্জে ৩০১ বস্তা সার জব্দ ও জরিমানা Dec 29, 2025
img
বর্ষসেরা দেম্বেল, রোনালদোর ঘোষণা: এক হাজার গোল করবই Dec 29, 2025
img
সোমালিল্যান্ড ইস্যুতে ইসরাইলকে কড়া বার্তা হুতির Dec 29, 2025
img
অলরাউন্ডার ডগ ব্রেসওয়েল অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিলেন Dec 29, 2025
img
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন আগামীকাল Dec 29, 2025
img
একদিনে প্রায় ৩ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ তাসনিম জারার, প্রয়োজন ১৫০০ Dec 29, 2025
img
কামিন্স ও হ্যাজলউডকে দলে নিয়ে স্কোয়াড সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া Dec 29, 2025
img
বুদ্ধিমান দর্শক তৈরি না হলে, ভালো কাজও নীরবে হারিয়ে যায়: সত্যজিৎ রায় Dec 29, 2025
img
ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা বিএনপি প্রার্থী নায়াব ইউসুফের Dec 29, 2025
img
বডি ক্যামেরা কেনার দায়িত্ব পেলেন ৬৪ জেলার এসপি Dec 29, 2025
img
কষ্টই মানুষকে শক্ত করে, আর শক্ত মানুষই সাফল্য পায়: অক্ষয় কুমার Dec 29, 2025
img
নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করা খুব দরকার: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় Dec 29, 2025