পশ্চিম জার্মানির গেলসেনকিরচেন শহরে ক্রিসমাসের ছুটির সুযোগে একটি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের দেয়াল ফুটো করে নগদ অর্থ, সোনা ও গয়না মিলিয়ে প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৩০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ সম্পদ লুট করেছে। স্থানীয় পুলিশ ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (৩০শে ডিসেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানায়, চোরেরা শহরের স্পার্কাস ব্যাংকের একটি শাখার পার্শ্ববর্তী পার্কিং গ্যারেজ থেকে বড় ড্রিল মেশিন ব্যবহার করে ব্যাংকের মোটা কংক্রিটের দেয়াল ফুটো করে। এরপর তারা ভূগর্ভস্থ ভল্ট রুমে প্রবেশ করে ৩,০০০ এর বেশি সেফ ডিপোজিট বক্স ভেঙে ফেলে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, তাদের মোট ৩,২৫০টি লকারের মধ্যে ৯৫ শতাংশেরও বেশি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ক্রিসমাসের লম্বা ছুটির কারণে ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার সুযোগ নেয় দুর্বৃত্তরা। পুলিশের ধারণা, চোরেরা কয়েক দিন ধরে ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান করে এবং কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই লুটপাট চালায়। সোমবার (২৯শে ডিসেম্বর) ভোরে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠার পর চুরির বিষয়টি জানাজানি হয় এবং জরুরি সেবাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভল্টের দেয়ালে বিশাল গর্ত দেখতে পান।
সিসিটিভি ফুটেজে সোমবার সকালে মুখোশধারী ব্যক্তিদের একটি কালো অডি আরএস ৬ গাড়িতে করে গ্যারেজ ত্যাগ করতে দেখা যায়। গাড়িটিতে ব্যবহৃত নম্বর প্লেটটি হ্যানোভার থেকে চুরি করা অন্য একটি গাড়ির ছিল।
পুলিশ এই ঘটনাকে অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং পেশাদার কাজ হিসেবে উল্লেখ করে এটিকে হলিউড মুভি 'ওশেনস ইলেভেন' এর স্টাইল বা কায়দার সঙ্গে তুলনা করেছে।
চুরির খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার শত শত গ্রাহক ব্যাংকের সামনে ভিড় করেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রতিটি লকারের গড় বিমাকৃত মূল্য ১০,০০০ ইউরো হলেও গ্রাহকদের দাবি, তাদের লকারে এর চেয়ে অনেক বেশি মূল্যের সম্পদ ছিল।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য হটলাইন চালু করেছে এবং বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা এখনো পলাতক এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সূত্র: আল জাজিরা
আরআই/টিএ