করোনা ভাইরাস: মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য গ্রহণ করুন

বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা সম্পর্কিত বহু সত্য-অসত্য সংবাদ-তথ্য। প্রতিটি নিউজ চ্যানেল এবং মিডিয়া আউটলেট এটি নিয়ে আলোচনা করছে, পত্র-পত্রিকায় আর্টিক্যাল ছাপা হচ্ছে। সামাজিক গণমাধ্যমেও অগণিত পোস্টের ছড়াছড়ি। অস্বীকার করার উপায় নেই, মানুষকে সচেতন করতেই এতো কিছু। আবার এটাও ঠিক যে, সচেতনতার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে উদ্বেগ-আতঙ্ক।

এই মহামারীর সময় অনেকেই মারাত্মকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন, যা তাদের মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকটকালীন মুহূর্তে মানসিক সুস্থতাকেও অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি। বিশেষ করে আতঙ্কগ্রস্ত, উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস আক্রান্ত, স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক করেছেন এমন লোক, বয়স্ক ব্যক্তিসহ অনেকের জন্যই এই উদ্বেগ-আতঙ্ক মারাত্মক ক্ষতিকর। তবে যে কোনো সুস্থ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষেও অতিরিক্ত উদ্বেগ-আতঙ্ক হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) পরামর্শ হলো- এসব লোকদের এমন সব সংবাদ দেখা, পড়া বা শোনা এড়ানো উচিৎ, যা তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

শুধু নির্ভরযোগ্য উৎসের সংবাদ বিশ্বাস করুন
আপনি যখন বিভিন্ন উৎস থেকে সংবাদ গ্রহণ করবেন, তখন বিভ্রান্ত হয়ে যাওয়া সহজ। অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে ছড়িয়ে পড়া তথ্য বিশৃঙ্খলাসহ বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে। চেন্নাই ভিত্তিক মনোচিকিৎসক ও এসসিএআরএফের পরিচালক ড. পদ্মাবতী রামচন্দ্রন এ বিষয়ে বলেন, মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য কেবল নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে পাওয়া তথ্যগুলি গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শুধু ডাব্লুএইচওর মতো ওয়েবসাইটগুলি থেকে সঠিক তথ্য গ্রহণ করা উচিৎ। সঙ্কট পরিস্থিতিতে চাপ অনুভব করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সুতরাং, আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত যে, এই আবেগের মধ্য দিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।’

প্রচুর ভুয়া সংবাদ ও তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে, তাই শুধু বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে সংবাদ-তথ্য গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে অসম্পূর্ণ-অসত্য সংবাদ বা তথ্য গ্রহণ/ বিশ্বাস করলে তা থেকে অহেতুক উদ্বেগ-আতঙ্ক তৈরি হতে পারে, যা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম।

সংবাদ-তথ্যের উৎস যাচাই করে নিন
সামাজিক গণমাধ্যমের যুগে আমরা ফেসবুক-টু্ইটারের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। এমনকি অনেকেই তার ফেসবুক টাইমলাইন থেকেই সংবাদ পড়ে থাকেন। এমন অসচেতনতার কারণে আমরা অনেক সময় সংবাদ বা তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলে যাই। কোন উৎস থেকে পোস্ট করা হলো, যিনি বা যারা করলেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটা, তারা কতটা পেশাদারভাবে সংবাদ বা তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন প্রভৃতি যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।

এ রকম একটা মহামারীর সময় কোন ব্যক্তি, পেজ বা অনির্ভরযোগ্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে পোস্ট দেয়া হলে না জেনে বুঝে তা বিশ্বাস করা বা ছড়িয়ে দেয়া কিংবা আতঙ্কিত হয়ে যাওয়া উচিৎ হবে না। সংবাদের উৎস যাচাই করে নিন, নির্ভরযোগ্য উৎস অনুসরণ করুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিয়মিত করোনাভাইরাসের বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। মনে রাখবেন, করোনার মহামারী রুখতে সচেতনতার প্রয়োজন, কিন্তু উদ্বেগ-আতঙ্ক আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: