কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা এক নারীর অভিজ্ঞতা

ইতিমধ্যে সারা পৃথিবীতে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নোভেল করোনাভাইরাস। প্রতিদিন ভাইরাসটির কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। আবার বিশ্বজুড়ে বহু লোক ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এমনি একজন অ্যামি ব্রোক, যিনি তার অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

৪৮ বছর বয়সী অ্যামি ব্রোক যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও রাজ্যের সামিট কাউন্ট্রিতে বসবাস করেন। সম্প্রতি তিনি কোভিড-১৯ রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তবে তিনি সেই সব সৌভাগ্যবানদের একজন, যারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন।

তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি লিখেছেন- ‘সব অবিশ্বাসী এবং যারা এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন না লেখাটি তাদের জন্য। আপনি যদি কোভিড-১৯ সংক্রমণ হয়েছে এমন কাউকে জানা দরকার পরে তাহলে আমার লেখাটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আমার কথা জানতে পারবেন।’

ব্রোক সামিট কাউন্টিতে কোভিড-১৯ নিশ্চিত হওয়া দ্বিতীয় রোগী অ্যামি ব্রোক। যারা এখনো এই রোগটি নিয়ে সচেতন নয় এবং যারা এর ভয়াবহতা বিশ্বাস করতে চাইছেন না তাদের ভুল ভাঙাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন।

তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেন- ‘বুধবার বিকেলে আমি দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমি দুর্বলতা ও জ্বর অনুভব করছিলাম। আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলাম তখন আমার জ্বর ৯৯.২। আমি অস্বস্তি, মাথা ব্যথা ও কাশি অনুভব করছিলাম, যা (কাশি) ভারী ছিল, কিন্তু কিছুই (কফ) বেরচ্ছিল না। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, পরে ভোর তিনটায় ঘুম ভাঙ্গে। আমার হৃদস্পন্দন প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছিল। আমার নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল এবং প্রতিবার কাশির পর আমার বুকটা শক্ত হয়ে যাচ্ছিল।’

তখন তিনি তার পরিচিত একজন নার্সের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলেন। নার্সের পরামর্শে তিনি ইআর’এ যোগাযোগ করলেন। অ্যামির শরীরের অবস্থা সময়ের সঙ্গে অবনতির দিকে যেতে লাগল।

অ্যামি ব্রোক নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেন- ‘আমার বিপি (রক্তচাপ) খুব কমে গিয়েছিল এবং আমার হৃদস্পন্দনের হার খুব বেড়ে গিয়েছিল। জ্বর ও কাশির সঙ্গে এটি ভালো লক্ষণ নয়। তারা আমাকে ভর্তি করল এবং অন্য প্রতিটি পরীক্ষার সঙ্গে আমার কোভিড-১৯ পরীক্ষাও করা হলো।’

শুক্রবার রাতে নিশ্চিত করা হলো অ্যামি ব্রোক কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত। এর আগ পর্যন্ত তাকে ব্যথার ওষুধ আর অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছিল। বর্তমানে তিনি হাসপাতাল থেকে মুক্ত হয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। ডাক্তারের অনুমতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ঘর থেকে বেরোতে পারবেন না।

দ্রুত আরোগ্য লাভ করে অ্যামি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। কিন্তু ফেসবুকে ঢুকে দেখলেন বন্ধুদের অনেকেই কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা অবিশ্বাস করছেন, মহামারী সম্পর্কে সচেতন নন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের গুরুত্ব অস্বীকার করছেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন- ‘কোয়ারেন্টাইন মজার কোনো বিষয় নয়, কিন্তু আমি বরং কোয়ারেন্টাইনেই থাকবো এবং জানবো আমি রোগটি অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছি না।’

তিনি আরও বলেন- ‘আমি এই সংক্রমণের প্রতিচ্ছবি। এটি নিষ্ঠুর এবং আমি একজন সুস্থ ৪৮ বছর বয়সী নারী, যার কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা নেই। আমি এখন শতভাগ সুস্থ নই, তবে আমি ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছি। এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিন। আপনি যাদের ভালোবাসেন, তাদের জীবন হয়ত এর উপর নির্ভর করছে।’ তথ্যসূত্র: অ্যামি ব্রোকের ফেসবুক প্রোফাইল ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: