মাসখানেক অন্তরালে থাকার পর জনসমক্ষে এসেছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। কিন্তু তারপরও বির্তক যেন পিছু ছাড়ছে না তাকে। সপ্তাহ যেতে না যেতেই তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে নতুন বির্তক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কিম কি ‘ডামি’ বা ‘নকল কিম’- ব্যবহার করছেন? মুখের আদল থেকে শুরু করে নাক, কান, দাঁত, চুলের পার্থক্য তুলে ধরে তাদের দাবি, গত ১ মে প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে যাকে দেখা গিয়েছিল, তিনি আসলে তার ‘ডামি’। এই দাবির তালিকায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্রিটেনের প্রাক্তন সাংসদ পর্যন্ত রয়েছেন।
প্রায় মাসখানেক অন্তরালে থাকার পর ১ মে এক অনুষ্ঠানে জনসমক্ষে দেখা যায় কিম জং উনকে। এর আগে তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল এপ্রিলের শুরুর দিকে। এক মাস জনসমক্ষে না দেখা যাওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জল্পনা, গুঞ্জন, গুজব ছড়াতে শুরু করে।
কেউ বলেছিলেন, তিনি গুরুতর অসুস্থ, প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। ‘মৃত্যুশয্যায় কিম’ বলে রটনা ছিল। কারও দাবি ছিল, অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে অন্তরালে। প্লাস্টিক সার্জারির তত্ত্বও খাড়া করেছিলেন নেটাগরিকরা। এমনকি, কিম জং উন আর বেঁচে নেই- এমন কথাও ঘুরছিল সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে দেওয়ালে। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছিল তীব্র কৌতূহল।
কিন্তু সবার জল্পনা-কল্পনা ও ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে ১ মে জনসমক্ষে আসেন কিম জং উন। ‘নিভৃতবাস’-এ যাওয়ার ২০ দিন পর একটি সার কারখানার উদ্বোধনের ফিতে কাটতে দেখা যায় তাকে। তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে এই নতুন বিতর্ক এবং গুঞ্জন।
খুঁতখুঁতে নেটাগরিকরা আগেকার ছবির সঙ্গে এখনকার ছবিতে কতটা পার্থক্য, পুরো কাটাছেঁড়া করে সে সব খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আর এখান থেকেই উঠে এসেছে নর্থ কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের ‘ডামি’ বা ‘নকল কিম’-এর তত্ত্ব। সন্দেহপ্রবণদের অনেকেই পাশাপাশি দুই ছবি রেখে দেখিয়ে দিচ্ছেন, দুই ছবিতে কোথায় কোথায় গরমিল।
ব্রিটেনের প্রাক্তন সাংসদ লুই মেন্শ যেমন বলছেন, ‘‘দাঁত ও কানের গড়ন এক রকম নয়। উপরের ঠোঁটের যে অংশকে ‘কিউপিড বো’ বলা হয়, তার চরিত্র দু’জনের আলাদা।’’ কেউ কেউ ফারাক দেখিয়েছিলেন হেয়ারস্টাইলের।
শুধু পার্থক্য দেখানোই নয়, যুক্তিও রয়েছে এই শ্রেণির নেটাগরিকদের। অনেকে তুলে ধরেছেন বিখ্যাত ব্যক্তিদের ‘বডি ডাবল’ ব্যবহারের কথা। হিটলার থেকে শুরু করে সাদ্দাম হুসেনের ‘ডামি’ ব্যবহারের উদাহরণ পর্যন্ত উঠে এসেছে। নিরাপত্তা বা শত্রুর আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা ডামি ব্যবহার করে থাকেন এবং কিমের ক্ষেত্রেও যে সেটা অমুলক নয়, সেই দাবিও করছেন তারা। আবার কিমের ক্ষেত্রে আগেও ডামি ব্যবহারের নজির রয়েছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরেও যুক্তি সাজানো হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
টাইমস/এইচইউ