দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজীর মন্দির

দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। মন্দিরটি দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে সুন্দরপুর ইউনিয়নের ঢেঁপা নদীর তীরে অবস্থিত।

এটির নির্মাণ শুরু করেন তৎকালীন দিনাজপুরের জমিদার প্রাণনাথ রায়। কিন্তু ১৭২২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করলে নির্মাণ কাজ স্থগিত হয়। পরে ১৭৫২ সালে তার ছেলে মহারাজা রামনাথ রায় মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

নির্মাণের সময় এর চূড়ার উচ্চতা ছিল প্রায় ৭০ ফুট। কিন্তু ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে মন্দিরটির চূড়াগুলো ভেঙে যায়। পরবর্তীতে মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরটি সংস্কার করেন। কিন্তু এর চূড়া আর সংস্কার হয়নি। বর্তমানে মন্দিরটির তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

আঠারো শতকে নির্মিত এই মন্দিরটি ‘নবরত্ন মন্দির’ নামেও পরিচিত। তিনতলা এই মন্দিরে ছিল নয়টি চূড়া। এটি ইন্দো-পারস্য ভাস্কর শৈলীতে ইটের তৈরি। মন্দিরটি নির্মাণে সময় লেগেছিল ৪৮ বছর। এর পাথর আনা হয়েছিল হিমালয়, বিহার ও আসাম থেকে।

তিন ফুট উঁচু একটি পাথরের বেদীর উপর নির্মিত মন্দিরটি। এর দেয়ালজুড়ে রয়েছে পোড়ামাটির ফলকে লেখা মহাভারত, রামায়ণ ও বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫ হাজারের মতো টেরাকোটা টালি আছে। মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে। আর তৃতীয় তলায় আছে মাত্র তিনটি।

প্রতি বছর রাস পূর্ণিমায় এখানে মেলা বসে। তখন প্রচুর লোক সমাগম হয়। দেশি-বিদেশি পর্যটরকেরও আগমন ঘটে।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাসে যেতে হবে দিনাজপুর। এজন্য নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, কেয়া পরিবহনসহ বেশ কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। শ্রেণিভেদে ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। এরপর অটোরিকশায় সহজেই যাওয়া যাবে কান্তজীর মন্দির।

এছাড়া ট্রেনেও যেতে পারেন। ঢাকা থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেস নামে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে।

থাকার ব্যবস্থা

থাকার জন্য দিনাজপুরে রয়েছে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল। এরমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে পর্যটন মোটেল, হোটেল ডায়মন্ড, হোটেল নবীন, হোটেল আল রশিদ প্রভৃতি। ভাড়া পড়বে শ্রেণিভেদে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

খাবার ব্যবস্থা

খাবারের জন্যও রয়েছে ভালোমানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট।

 

Share this news on:

সর্বশেষ

ইলন মাস্কের রকেটের আরেকটি ব্যর্থতা! Jun 20, 2025
দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নোয়াখালীতে, রাস্তায় মাছ ধরলেন বাসিন্দারা! Jun 20, 2025
সাইকেলে এমন উঁচুতে? ১৫০ কিমির চরম এক অ্যাডভেঞ্চার! Jun 20, 2025
দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ বিএনপি নেতার Jun 20, 2025
img
ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তহীনতার সমালোচনা করলেন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা Jun 20, 2025
img
ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয় : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Jun 20, 2025
img
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত সরকারের Jun 20, 2025
img
সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির ১০ স্টাফের বিরুদ্ধে মামলা Jun 20, 2025
img
ময়মনসিংহে মানব কঙ্কালসহ গ্রেফতার ১ Jun 20, 2025
img
‘উনি আমার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত যা খুশি বলার অধিকার রাখেন’ Jun 20, 2025
img
প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব, নীতি ছাড়ব না : জিএম কাদের Jun 20, 2025
img
ঠিক আছে, ধন্যবাদ, বিদায় : মাহিয়া মাহি Jun 20, 2025
হলে গিয়ে নাটকের লোকদের দেখব, প্রশ্নই আসে না- ইকবা Jun 20, 2025
ইশরাক হোসেনের ব্যপারে বিএনপিকে যে বার্তা দিতে চায় সরকার Jun 20, 2025
img
প্রেমের অপূর্ব কাব্য ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ এর ২৬ বছর Jun 20, 2025
img
ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ব্রিটেনের গবেষণা প্রতিবেদন Jun 20, 2025
img
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের সিরিজ জয় দেখছেন শচীন Jun 20, 2025
img
খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল Jun 20, 2025
img
১০ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ Jun 20, 2025
img
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে: মির্জা ফখরুল Jun 20, 2025