ফ্লেক্সিলোড দোকানির সোনালী ব্যাংক অফিসার হয়ে উঠার গল্প

অভাবের সংসারে থেকেও অদম্য স্পৃহা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বাবা চাকরি হারিয়ে ফেললে একসময় ফ্লেক্সিলোডের দোকানেও কাজ করেছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে চলা সেই মেয়েটি এখন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা হয়েছেন। সেই সফলতার গল্পটা নিজের মুখেই বলেছেন নাসরিন আক্তার রুনা।

পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই জানতে চেয়েছেন কীভাবে আমি পড়েছি বা কীভাবে আমি ১ম রিটেন, ১ম ভাইভাতেই এই অবস্থান অর্জন করেছি। যারা আমাকে জানেন বা দেখেছেন তারা অনুধাবন করেছেন আমার স্ট্রাগলিং লাইফ। আজ আমার থেকে অনেক বেশি খুশি তারা হয়েছে, যারা মন থেকে আমার সফলতা চেয়েছেন।

আমি মনে করি এই চাকরি আমার সফলতার ১ম সিঁড়ি। আমাকে যেতে হবে আরো অনেকটা পথ। তবে এটা সত্য যে আগামীতে যদি বিসিএসের সর্বোচ্চ ক্যাডার ও হয়ে যাই তবুও এই খুশির কাছে ওটা অনেক কম হবে। তবুও অনেকের অনুরোধ রক্ষার্থে আজ আমি আমার জীবনের কিছু কথা তুলে ধরব। এটা পড়ার পর যদি কোন হতাশাগ্রস্ত মানুষ নতুন করে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি পায় তবেই আমার লেখাটা সার্থক।

মেয়েবেলা এবং আর্থিক অবস্থা : আমার আব্বু গাবতলিতে এক পরিবহনে কাজ করতেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা বলতে ২য় শ্রেণি পাশ। তবুও প্রায় ২৮ বছর তিনি অভিজ্ঞতার জোরে ম্যানেজার পোস্টে ছিলেন। গাবতলি এমন এক জায়গা যেখানে ধোকা দিয়ে বা অসৎ উপায়ে অনেক টাকা আয় করা গেলেও আমার আব্বু একটু অন্যরকম। তিনি নিজের যেটুকু আছে তাই নিয়েই থাকা পছন্দ করতেন। তাই সবসময় অভাব লেগেই থাকত। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত টিনশেড বাড়িতে থেকেছি। ছোটকাল থেকেই বলা যায় মেধাবী ছিলাম। রোল ১ম সারিতেই থাকতো। আব্বু আম্মুর স্বপ্ন তখন থেকেই যে আমাকে তারা অনেকদূর পড়াবেন। সিক্সের মাঝামাঝি দিকে ২ রুমের ফ্লাটে উঠি। আব্বু চেয়েছিলো আমাদের একটা ভালো পরিবেশে বড় করতে। কয়েক বছরে কোন জামা-কাপড় না দিলেও বই-খাতা-কলম ভরপুর ছিলো। তার একটাই কথা ‘পড়াশুনা করে যখন বড় অফিসার হবি তখন বিলাসিতা করিস’।

টিউশন এবং পড়ার পরিবেশ : নিরিবিলি পড়াশুনা করার মত পরিবেশ কখনোই আমার বাসায় ছিল না। তার প্রধান কারণ আমার বাসায় সবসময়ই কোন না কোন মেহমান থাকতোই। আমার এসএসসির সময় বাসায় ১৪+ মানুষ ছিলেন। আমার অনেক বন্ধুরা তামাশা করে বলতো, তোদের বাড়ি নাকি ফ্রি সরাইখানা? এটা নিয়ে কিছু বলার নাই। কারণ আমার আম্মু এতটাই ভাল মানুষ যে বোঝানো যাবেনা। আমি মাঝে মাঝে বিরক্ত হলেও মা বোঝাতেন এভাবে ‘মানুষ বিপদে পড়েই আসে, মানুষের উপকার করলে আল্লাহ খুশি হয়। আমার নিরিবিলি পড়াশোনার জন্য রুম তো দূরে থাক আমি আজীবন মেঝেতেই ঘুমাইছি। পড়াশোনা অনেক কম করতাম তবে যেটুকু করতাম ভাল করে। আমি ক্লাস এইট থেকে টিওশন করাই। প্রায় ১৬ বছর টিউশনি করিয়ে ২০১৯ এর ডিসেম্বরে সব বাদ দিয়ে চাকরির পড়া শুরু করি। গণিত+ইংরেজি পড়াতাম।

ভুল সিদ্ধান্ত এবং কিছু হতাশা : জীবনে আমি একটাই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর সেটা হলো একজনের প্রেমে অন্ধ হয়ে বিবিএতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ঢাকা ছেড়ে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে বিবিএ করা। এমন একটা ভুল সিদ্ধান্ত আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। পরিবারকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে চলে গেলাম যশোর। তারা আজ হয়তো জানবে যে পাবলিকে চান্স পেয়ে আমি পড়িনি। পড়েছি ন্যাশনালে। ঢাকা থেকে যশোরে কেন এই প্রশ্নের সম্মুখীন আমি প্রতিনিয়ত হয়েছি আর আমি অবলীলাক্রমেই বলে দেই প্রেমের টানে গিয়েছি বাঁশঝাড়ে।

যাহোক, যশোরে আমার দিন অনেক কষ্টে কেটেছে। বাপ-চাচারা ৩ বছর কোন কথা বলেননি আমার সাথে। মাস শেষে মাত্র ৩০০০ টাকা আব্বু পাঠাতেন। যেখানে ১১০০+১১০০= ২২০০ আমার কলেজের বেতন আর ঘরভাড়াতেই যেত। বাকি ৮০০ টাকায় কি আর বাজার বা অন্য খরচ হয়? ঢাকায় টিওশনি করিয়ে যেমন টাকা পেতাম যশোরের টিউশন পুরাই ছ্যাচড়ামি। ৫০০-৭০০ এর উপর কেউ টাকা দিত না। তবুও কয়েকটা টিউশনি করাতাম। এভাবে কোনরকম কষ্ট করে ৫ বছর কাটিয়ে ২০১৫ তে ঢাকায় চলে আসি।

আব্বুর চাকরি হারানো এবং আমার দোকানদারি : ২০১৫ তে ঢাকা এসেও টিউশনি ধরি। আর এরআগে ২০১৪ এর দিকে এত পরিমান হরতাল-অবরোধ ছিল যে ওই সময়ের কষ্টের কথা বর্ণনা করলে শেষ হবেনা। ২০১৬ এর প্রথম দিকে আমার আব্বুর চাকরি চলে যায়। অনেকটা রাগ করেই আব্বু ২য় বার ডাকা স্বত্তেও জয়েন্ট করেনি। সে পাশের আরেকটা পরিবহনে আরো নিচু পোস্টে জয়েন্ট করে। একে তার যে বয়স তার উপর এমন চাপ নিয়ে ওই কাজ করাটা ঠিকও না। আমার ছোট ভাইটাও অনেক স্ট্রাগল করেছে। কারণ ওই সময়েও একটা মোবাইল সার্ভিসের দোকানে কাজ করে কিছু টাকা আয় করতো সে। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমি আর আমার ভাই দোকান দিলাম। এই দোকান করতে পরিবারের কেউই সম্মতি দেয়নি। এমনকি আমার আব্বুও না। কারণ আজীবনের স্বপ্ন আমাকে সরকারী চাকুরীজীবি হিসেবে দেখবে। সেখানে এখন দোকান তাও লোড বিকাশের। আত্নীয়রাও এটা মানলেন না। এত পড়াশোনা করে শেষে নাকি এই কাজ? ছিঃ পরিচয় দেয়া যায় নাকি?

মাত্র ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আমি আর আমার ভাই দোকান দেই। টাকা সব ধার করা। আমার ও রানা (আমার ভাই) এর কিছু বন্ধু/পরিচিতরা ধার দিয়েছিলেন। দোকানের মালিক অনেক ভাল। অ্যাডভান্সের টাকাও নেননি আমাদের উপর মায়া করে। মাত্র একটা টেবিল আর ২টা চেয়ার দিয়ে দোকানের যাত্রা শুরু। তখন আমার ভাই প্রাইম ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করে। ওর সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস আর আমার ক্লাস ২ দিন জাহাঙ্গীরনগরে (শুক্র+শনি)। ৩ বছর ১ সেকেন্ডও হয়তো রেস্ট নেইনি। সকাল থেকে দুপুর আমি বসতাম। রানা ভার্সিটি থেকে এসে গোসল+খাওয়া শেষে টানা রাত ৯টা পর্যন্ত বসতো। আমি তখন ৬ জন স্টুডেন্ট পড়াতাম বিকাল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা বেজে যেত। একেকজনের বাসা ৪-৬ তলায় ছিল।
টিউশন থেকে এসে বাসায় ব্যাগ রেখে নামাজ পড়েই আবার দোকানে বসতাম। তখন রানা মোবাইল সার্ভিসের কাজ করতো। এভাবে প্রায়ই ১১টা বাজে ঘরে ঢুকতাম। আর শুক্র শনিবার সারাদিন আমি জাবিতে থাকতাম। রানা একা কষ্ট করতো। দোকান দেবার পর আব্বু ভেবেছিলো টিকবেনা। কয়দিনেই হয়তো শখ পূরন হবে। কিন্তু রানা আর আমার নিরলস পরিশ্রম এ এলাকায় সবাই খুব পছন্দ করলেন। ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি আমি বাসায় আসি আর রানাও বাইরে। এই সুযোগে আব্বুকে হতবুদ্ধি করে দিয়ে ৩ জন প্রায় ৯৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এটা অনেক বড় ধরনের ধাক্কা ছিল। কিন্তু হতাশ হইনি আমরা। আবার শুরু করি পথচলা। দোকানের শক্তি আমার ভাই। আমি শুধু একটু সাপোর্ট দিয়েছি। এখন মিরপুর ১ এ আমাদের দোকান সেরা দশে এ আছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে আমার ভাই আর আমার নিষ্ঠার মাধ্যমে কাজ করাতে।

চাকরির পড়াশুনা : আমি যদি এখন বলি যে পড়াশুনাই করিনি তবে সবাই বলবেন, চাকরি হয়ে গেছে তাই ভাব নিচ্ছি। তবে এটা সত্যি যে টোটাল বই না ধরে প্রিলিতে টিকেছি। প্রিলির রেজাল্টের কয়েকদিন পর আমি জানতে পারি যে আমি টিকেছি। অথচ তখন রিটেনের জন্য সময় নাই। আল্লাহ তায়ালা আমার প্রতি সর্বদা কৃপা দেখান। হয়তো তার জন্যই ৯ তারিখের রিটেন পরীক্ষা পিছিয়ে ১৬ তারিখ করা হয়। এদিকে আমার ১ম রিটেন। কিছুই জানিনা। আমার বান্ধবী দৃষ্টি জনতা ব্যাংকে ছিলো। ও আমাকে বিগত সালের প্রশ্নের ম্যাথ আর মহিদ’স সম্পাদকীয় পড়ার উপদেশ দেয়। আমি অনলাইনে একটা ফোকাস রাইটিংয়ের বই অর্ডার দেই।আমার জীবনের ১ম অনলাইন শপিং। মেয়েরা সাজুগুজু দেয় আর আমি দিলাম বই। বাসায় বললাম আমাকে এই ৬টা দিন একটু পড়তে দাও। রিটেনটা একটু কষ্ট করে দেই। এরপর মাত্র ৬ দিন মোটামুটি পড়লাম। পরীক্ষায় সব ভাল লিখলাম তবে ম্যাথ হলো মাত্র ২ টা। সবার যেখানে ৪-৫টা সেখানে ২ ম্যাথ নিয়ে আশা করা বোকামি। তবুও একটা বিশ্বাস রাখলাম কারন অনেকেই ফোকাস রাইটিং ভাল লেখেনি। এরপর রিটেনেও টিকলাম। সেদিন খুব খুশি লাগছিলো। ভাইভা ছিলো ৭ এপ্রিল। ভাইভাটাও দারুন মজার ছিলো।

ভাইভা দেবার পর মনে হলো আমি যদি একদম প্রিপারেশন ছাড়া ভাইভার দুয়ারে যাই তবে হয়তো একটু পড়াশুনা করলে হয়তো পারব। এরপর দোকানে একটু কম সময় দিয়ে একটু পড়ায় মন দেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু বাসায় এত গ্যানজামে আড্ডাই হয়। তবে আমি সময় নষ্ট করতাম না। দোকানে যতক্ষণ বসতাম একটা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বা কোন না কোন এমসিকিউ টাইপ বই থাকতো। কাস্টমার গেলে পড়তাম। অনেকে টিটকারিও মারতো যে দেখানো পড়া পড়ছি। স্টুডেন্টের বাসায় ওদের পড়া দিয়েও টুকটাক পড়তাম। এর জন্য একবার এক গার্ডিয়ান কথাও শুনিয়েছিলো যে তার বাচ্চা পড়াতে আসছি নাকি নিজে পড়তে আসছি? ফেসবুকে আমি সবসময় অ্যাকটিভ থাকতাম। বিভিন্ন গ্রুপে কাজ করা। পোস্ট দেয়া, কমেন্ট রিপ্লাই যেন একটা নেশা। এর মাঝেও ব্যাংক গ্রুপের পোস্ট সবসময়ই পড়তাম।

স্টুডেন্ট পড়ানোটাই আমার সবথেকে বড় শক্তি আমি মনে করি। না হলে কিছুই হতোনা। যতই আমি বলি পড়িনি তবে এগুলোই হয়তো আমার পড়াশুনা ছিলো। অনেকে মজা করে বলে সারাদিন ৩-৪টা পোস্ট দিয়ে, এত ফেসবুকে থেকে, দোকানদারি করেও কিভাবে চাকরি হলো? লোক আছে নাকি? কয় টাকা লাগলো? তখন শুধু হাসি।

সবার সফলতার গল্প পড়তাম। ভাবতাম আমিও লিখব কোনদিন। অনেক কিছুই লেখা হলোনা। তবুও এত বড় লেখা কেও যদি পড়ে তবে এত সময় নিয়ে লেখাটা সার্থক হবে। শেষে একটা কথা বলে বিদায় নেব 'You have to fight through some bad days to earn the best days of your life. Accept your past without regret, handle your present with confidence & face your future without fear.'

সবার জন্য শুভ কামনা। দোয়া করবেন যেন জীবনে সফল হতে পারি। ধন্যবাদ।

লেখক: অফিসার (ক্যাশ), সোনালী ব্যাংক (সুপারিশপ্রাপ্ত)

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ: অ্যাডহক কমিটি না থাকলে সভাপতির ভূমিকা ইউএনও-ডিসির Nov 16, 2025
img

পুলিশের কাছে নিখোঁজ তরুণীর বার্তা

আমাকে খুঁইজেন না, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আছি এবং ভালো আছি Nov 16, 2025
img
বক্স অফিসে অজয়-রাকুলের ছবি কেমন জমলো? Nov 16, 2025
img
নির্বাচনে যারা পেশিশক্তি দেখাবে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে : ইসি সানাউল্লাহ Nov 16, 2025
img
বিআইআইএসএস-এর নতুন ডিজি রিদওয়ানুর রহমান Nov 16, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চাচ্ছে: রিজভী Nov 16, 2025
img
এআই প্রযুক্তিতে বানানো ভুয়া ভিডিও নিয়ে সতর্ক করল অর্থ মন্ত্রণালয় Nov 16, 2025
img
কাফনের কাপড়ে রাস্তায় শুয়ে রিজভীকে আটকে দিলেন নেতাকর্মীরা Nov 16, 2025
img
২১ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে যান চলাচল সীমিত থাকবে Nov 16, 2025
img
জুলাই সনদ ও গণভোট ঝুঁকিতে পড়তে পারে : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি Nov 16, 2025
img
হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় আগামীকাল, ন্যায়বিচার চাইলেন মির্জা ফখরুল Nov 16, 2025
img
ফার্স্ট লুকেই ঝড় তুলেছে মহেশ-প্রিয়াঙ্কার সিনেমা Nov 16, 2025
সুখী পরিবার দুটি গুণ | ইসলামিক টিপস Nov 16, 2025
img
মিচেলের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাল নিউজিল্যান্ড Nov 16, 2025
img
ইবির পরীক্ষার হল থেকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মীকে থানায় সোপর্দ Nov 16, 2025
বাজরাঙ্গি ভাইজানের মুন্নি এবার দক্ষিণ ভারতের বড় পর্দায় Nov 16, 2025
সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যু পরবর্তী সম্পত্তি বিবাদে হাইকোর্টের কড়া নজর Nov 16, 2025
যেখানেই গিয়েছি, সব জায়গায় নিজেকে উন্নতি করার চেষ্টা করি : সাইফ হাসান Nov 16, 2025
সাভারে উন্মুক্ত সভায় জনতার কথা: সমাধানের আশ্বাস দিল প্রশাসন Nov 16, 2025
কিয়েভে নিহত ৭, আকাশ প্রতিরক্ষা বাড়াতে চান জেলেনস্কি Nov 16, 2025