উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামের উলিপুরের নাগরাকুড়া এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকেই রাস্তা ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সেই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ও স্থানীয় সড়ক পানির তোড়ে ভেঙে গেছে।

প্রতিদিনই কুড়িগ্রামে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের কালে আগাম বন্যায় দিশেহারা শ্রমজীবী মানুষ। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ গো-খাদ্যের সংকট। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা সহায়তা কার্যক্রম শরু হয়নি।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বন্যায় কুড়িগ্রামের ৫৫টি ইউনিয়নের ৩৫৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৫ হাজার ৬০০ পরিবারের ৬৪ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঘরবাড়ি হারিয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। এছাড়া ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ ৩৭ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। এছাড়াও কৃষিতে পাট, আউশ ধান, আমন বীজতলা, তিল এবং সবজিসহ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫ হাজার ৬৫৩ হেক্টর ফসলী জমি।

এদিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। পৌর এলাকাসহ ৮টি ইউনিয়নে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টের যমুনার পানি আরও ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য ২১ মেট্রিক টন জিআর চাল, ১ লাখ ৭৭ হাজার নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১৭৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

অপরদিকে কুড়িগ্রাম, জামালপুরের মতো বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এসব এলাকায় লাখ লাখ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা ২ হাজার টাকা, অধ্যাদেশ জারি Dec 31, 2025
img
প্রতারণার শিকার হয়েছেন কৃতি খারবান্দা Dec 31, 2025
img
জেলায় জেলায় খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা Dec 31, 2025
img
এলিজাবেথ চরিত্রে হুমা কুরেশি! Dec 31, 2025
img
২১তম দেশ হিসেবে ইউরো মুদ্রা চালু করছে বুলগেরিয়া Dec 31, 2025
img
খল চরিত্রে নজর কাড়লেন কারিনা কাপুর Dec 31, 2025
img
বার্ষিক আয় সাড়ে ৮ লাখ, দেড় কোটি টাকার সম্পদের মালিক আমির হামজা Dec 31, 2025
img
শাহরুখপুত্র আরিয়ানের প্রেমিকা, কে এই এই ব্রাজিলিয়ান সুন্দরী লারিসা? Dec 31, 2025
img
পরীক্ষায় ফেল কিম কার্দাশিয়ান, মন ভাল রাখতে কী করছেন? Dec 31, 2025
img
জানাজায় অংশ নিতে আসা বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে উপদেষ্টাদের সাক্ষাৎ Dec 31, 2025
img
নতুন লুকে নজর কাড়লেন নয়নতারা Dec 31, 2025
img
চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে অক্ষয় খান্নার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ Dec 31, 2025
img
স্বামীর পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত ‘আপসহীন নেত্রী’ খালেদা জিয়া Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার ঐতিহাসিক বিদায়, এটা সবার ভাগ্যে জোটে না: ফারুকী Dec 31, 2025
img
দুবাইতে কপিল শর্মার নতুন রেস্তোরাঁ Dec 31, 2025
img
‘ব্যাটল অফ গালওয়ান’-এ অভিনয়ের জন্য কত নিচ্ছেন সালমান ও চিত্রাঙ্গদা? Dec 31, 2025
img
বরিশালে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার Dec 31, 2025
img
নুরুল হক নুরের পেশা ব্যবসা, রয়েছে ৯০ লাখ টাকার সম্পদ Dec 31, 2025
img
হাজার কোটি পেরিয়েও বিপুল ক্ষতির মুখে ‘ধুরন্ধর’! Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর দিনে নিজের বহিষ্কারকে ‘সংকেতপূর্ণ’ বললেন রুমিন ফারহানা Dec 31, 2025