আওয়ামী লীগের যেসব খাতে আয় বেড়েছে দ্বিগুণ

বিগত বছর শেষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্বমোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এরমধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭১৭ টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৬ টাকা। যার মধ্যে দলটির নামে ৪০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে।

বুধবার নির্বাচন কমিশনের কাছে দেয়া ২০১৯ পঞ্জিকা বর্ষের আওয়ামী লীগের দলীয় আয়-ব্যয়ের হিসাবে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। দলটির প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া নির্বাচন কমিশনে এই হিসাব জমা দেন।

আওয়ামী লীগের আয় ব্যয়ের হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত সাত বছর দলটির একটানা আয় বেড়েছে। সেই অনুযায়ী দলটির ব্যয় নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু সম্পদের আর্থিক পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দলটির মোট আয়কৃত অর্থের পরিমাণ ব্যয়ের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনে হিসেব জমা দেয়ার পর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ জানান, ২০১৯ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছে ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ২১ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা।

২০১৯ সালে দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের উদ্বৃত্ত ছিল ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এখন আওয়ামী লীগের তহবিল দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৩ টাকা।

জানা গেছে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত মোতাবেক প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয়। ইসিতে জমা দেয়া হিসাব থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তহবিলে ছিল নগদ ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৮ টাকা। সে সময় ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৩৭ কোটি ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০ টাকা ।

২০১৮ সালে সর্বমোট অর্থ ছিল ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৮৩৮ টাকা। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে সর্বমোট ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা ।

এ সময়ে যেসব খাত থেকে আয় হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- নমিনেশন ফরম বিক্রি ১২ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সম্মেলন বাবদ প্রাপ্ত ৩ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮০০ টাকা। ব্যাংক লভ্যাংশ বাবদ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ২২৩ টাকা। সংসদ সদস্যদের প্রদেয় চাঁদা বাবদ ১ কোটি ৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মাসিক চাঁদা, জেলাভিত্তিক প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ চাঁদা ও প্রাথমিক সদস্য ফরম, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের হলভাড়া, পত্রিকা প্রকাশনা ও বিজ্ঞাপন (উত্তরণ) এবং পুস্তক বিক্রিসহ অন্যান্য খাত থেকে বাকী আয় হয়েছে।

২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের ব্যয় হয়েছে সর্বমোট ৮ কোটি ২১ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। এ সময়ে সেব খাতে ব্যয় হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ হলো- আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন বাবদ ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা।

কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, আপ্যায়ণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৭০০ টাকা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৫ টাকা। সভাপতির কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ ৫৫ লাখ টাকা।

এছাড়াও নির্বাচন পরিচালনা অফিস, অফিস রক্ষণাবেক্ষণ, ত্রাণ কার্যক্রম, উত্তরণ পত্রিকা প্রকাশনা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জেলা জনসভা ও দলীয় অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা, বিজ্ঞাপন ও পোস্টার প্রকাশনা বাবদ, সাংগঠনিক খরচ, ৫ কার্যালয়ের সার্ভিস চার্জসহ অন্যান্য খাতে বাকি অর্থ ব্যয় হয়েছে।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: