ডায়াবেটিসকে বলা হয়ে থাকে সর্ব রোগের জনক। কারণ দেহে একবার রোগটি বাসা বাঁধলে পরে ক্যান্সার কিংবা হৃদরোগের মতো আরো অনেক জীবনঘাতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় সকল বয়সের ব্যক্তিরই রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এই দুরারোগ্য ব্যাধিটি থেকে কখনোই সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়। তবে নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, জীবন-যাত্রার পরিবর্তন ও শরীরচর্চা অনুশীলনের মাধ্যমে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
পৃথিবীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪২.২ কোটিরও বেশি। প্রতিবছর ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতায় বহু লোক মৃত্যুবরণ করেন।
সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যাচ্ছে নিয়মিত গ্রিন টি ও কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি কমে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিন ২ কাপ কফি কিংবা ৪ কাপ গ্রিন টি পান করার অভ্যাস ডায়াবেটিস রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে সক্ষম।
গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চমাত্রার কফি গ্রহণের সাথে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস হওয়ার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে, গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গ্রিন টি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
জাপানিজ বিজ্ঞানীদের করা এই গবেষণা সম্পর্কিত ফলাফল ‘বিএমজে ওপেন ডায়াবেটিস রিসার্চ এন্ড কেয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষণায় ২০ থেকে ৬০ বছর বয়সের ৪,৯২৩ জন ডায়াবেটিস রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ, রক্তচাপ, শরীরচর্চার মাত্রা, ধূমপান, শরীরে পেশির পরিমাণ, ঘুমের সময়কাল প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গবেষকগণ বিশ্লেষণ করেছেন। ৫.৩ বছর মেয়াদী এই গবেষণা চলাকালে ৩০৯ জন অংশগ্রহণকারীর মৃত্যু ঘটে।
গবেষকগণ এ বিষয়ে মন্তব্য করেন, “৫.৩ বছরের গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি গ্রিন টি ও কফি পানকারীদের মৃত্যু হার ৬৩ শতাংশ কম। ”
গবেষণার সীমাবদ্ধতার বিষয়ে তাদের মত হলো, গ্রিন টি ও কফি পানের অভ্যাসের সাথে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সংগতির সম্পর্ক রয়েছে এবং এই বিষয়গুলো স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনকে যথেষ্ট প্রভাবিত করে। তাই কফি ও গ্রিন টি’র পাশাপাশি উক্ত বিষয়গুলোও মৃত্যুহারকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে।
তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে
টাইমস/এনজে