সেনাদের উদ্দেশ্যে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২০ উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় সেনাদের উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণে সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন- সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও পেশাগত দক্ষতায় বলীয়ান হয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশ গড়ার কাজে অবদান রাখবেন।

এর আগে শনিবার সন্ধায় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনীর প্রধানরা।

সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করার পর থেকে সশস্ত্র বাহিনী দেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে। চলমান কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্যও কাজ করছে সশস্ত্র বাহিনী।

পরে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম এবং পেশাগত দক্ষতায় বলীয়ান হয়ে দেশের প্রতিরক্ষা এবং দেশ গড়ার কাজে আরও বেশি অবদান রাখবেন- পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার কাছে এই প্রার্থনা করি। সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি।

ভাষণের শুরুতে তিন বাহিনী সদস্যসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় অন্যান্য বছরের মতো এ বছর সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি বলে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাহিনীগুলো নিজেদের মতো করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে আজকের এই দিনটি এক বিশেষ গৌরবময় স্থান দখল করে আছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মহান আত্মত্যাগ ও বীরত্বগাথা জাতি চিরদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। ১৯৭১ সালের এই দিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা যৌথভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করেন। সম্মিলিত আক্রমণের মুখে শত্রুবাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

জাতির পিতা প্রবর্তিত ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই মূলমন্ত্রে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিমালা পরিচালিত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আমরা বিশ্বাসী। তবে যে কোনো আগ্রাসী আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা সদাপ্রস্তুত ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর প্রতিরক্ষানীতি ১৯৭৪-এর আলোকে আমরা ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র বাহিনীকে সাংগঠনিকভাবে পুনর্গঠন, উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিশেষায়িত সামরিক সজ্জায় সজ্জিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা একটি উন্নত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করায় ১৯৭৪ সালে প্রণয়ন করেছিলেন প্রতিরক্ষা নীতি।সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে জাতির পিতার নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী লগ্নে জাতির পিতা প্রণীত জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং কর্মদক্ষতা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। করোনা মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য আক্রান্ত হন এবং বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আর যারা করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন, তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পালানোর সময় ১৭ বিয়ে করা বরিশালের সেই বন কর্মকর্তা আটক Sep 17, 2025
img
বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে কাজ পাচ্ছেন না সামান্থা Sep 17, 2025
img
সবাই নিজের কাজে মন দিন, বাগদান জল্পনার মাঝে হুমা কুরেশি Sep 17, 2025
img
৩ দিক থেকে আসছে ট্যাংকের বহর, গাজা ছাড়তে ৪৮ ঘণ্টার জন্য নতুন রুট Sep 17, 2025
img
বিচারের আগে আওয়ামী লীগ ও জাপাসহ ১৪ দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: রাশেদ Sep 17, 2025
img
এক লাখের বেশি বিদেশি কর্মীকে ওয়ার্ক পারমিট দিয়েছে ক্রোয়েশিয়া Sep 17, 2025
img
বাংলাদেশের সমর্থকরাও আমাদের জয়ের অপেক্ষা করছে: শানাকা Sep 17, 2025
img
ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ সরাতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারব না কেন: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
সাড়ে ৩ হাজার চিকিৎসকের যোগদান শিগগিরই : স্বাস্থ্যের ডিজি Sep 17, 2025
img
পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট Sep 17, 2025
img
যারা গুপ্তভাবে কাজ করে তারাই অনিয়মের পথ বেছে নেয় : টুকু Sep 17, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকার আইন ও বিচার ব্যবস্থায় অমূল পরিবর্তন করেছে: আসিফ নজরুল Sep 17, 2025
img
মামলার ভয় দেখিয়ে পুলিশের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ Sep 17, 2025
img
গ্রেপ্তার এড়াতে শ্রমিক সেজেছিলেন, তবুও শেষ রক্ষা হলো না ছাত্রলীগ নেতার Sep 17, 2025
img
জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বর Sep 17, 2025
img
আগে বায়ার্ন মিউনিখকে হারাই, তারপর পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবব: চেলসি কোচ Sep 17, 2025
img
শরতের আবহে মিমের মুগ্ধতা Sep 17, 2025
img
ড. ইউনূসের সফরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকবে নিউইয়র্ক পুলিশ Sep 17, 2025
img
ফরিদগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার Sep 17, 2025
img
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তাব বিশেষজ্ঞদের: আলী রীয়াজ Sep 17, 2025