জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে নিলেন মা

বিনাদোষে তিন বছর কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছেন পাটকল শ্রমিক জাহালম। রোববার রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

এদিকে জাহালমের মা মনোয়ারা তার বড় ছেলে শাহানূরের কাছ থেকে আগেই জেনে গেছেন, জাহালম জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। খবর পেয়ে অপেক্ষায় মা মনোয়ারা, কখন বাড়ি ফিরবেন তাঁর আদরের খোকা জাহালম, যাকে তিনি তিন বছর দেখেননি।

রাত ৪টা নাগাদ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বড় ভাই শাহানূরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। অন্ধকারে মোবাইলের আলো দূর থেকে দেখে ছুটে এলেন মা মনোয়ারা। জাহালমকে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে জড়িয়ে ধরলেন মনোয়ারা।

এরপর জাহালম মা মনোয়ারাকে জড়িয়ে ধরে মাঠের আল ধরে বাড়ির উঠানে আসেন। সেখানে আবারও জাহালমকে জড়িয়ে ধরে বুক ফাটা কান্না শুরু করেন মনোয়ারা। আহাজারি করেন জাহালমের ভাই-বোন, ভাবী ও স্বজনরাও। শেষে জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুলে নেন মা মনোয়ারা।

জাহালমকে কাছে পেয়ে মা মনোয়ারা বলেন, ‘মানষে আমার সর্বনাশ করেছে, আল্লাহ তাগো বিচার করো।’ বিনা দোষে জাহালমকে জেল খাটতে হলো।

উল্লেখ্য, পাঁচ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে জাহালমের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঠিকানায় একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় জাহালমকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়। জাহালম সে সময় নরসিংদীর ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করছিলেন।

যথা সময়ে দুদকে হাজিরা দিয়ে জাহালম আবার তার নরসিংদীর জুট মিলের কর্মস্থলে চলে যান। এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর ঘোড়াশালের ওই জুট মিল থেকে জাহালমকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে সোনালী ব্যাংকের ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাতের ৩৩টি মামলায় জাহালমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় দুদক।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: