উন্নয়ন নাকি ভোগান্তি

রাজধানীতে সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজ চলে। স্যুয়ারেজ লাইনসহ বিভিন্ন কারনে রাস্তা কেটে মাসের পর মাস ফেলে রাখায় জনভোগান্তিও চরমে। যে কারনে উন্নয়ন কাজে যেখানে সাধারণ মানুষের খুশি হওয়ার কথা, সেখানে উন্নয়ন কাজের শম্ভুক গতিতে উল্টো ক্ষুব্দ ও বিরক্ত তারা। উন্নয়ন কাজের জন্য কেটে রাখা সড়কের মাটির ধূলোবালি উড়ে ঘর-বাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই কাদা পানিতে একাকার। তখন ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। চলাচলে পথচারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
 
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের বিভিন্ন সড়ক কেটে স্যুয়ারেজ লাইনের উন্নয়ন কাজ চলছে। মে মাসের শুরুতে এসব সড়ক কাটা হলেও অদ্যাবধি এখনও একই অবস্থায় রয়েছে। ময়লাযুক্ত পঁচা পানির দুর্গন্ধে এলাকার বাসিন্দাদের অবস্থা শোচনীয়। সাধারণ পথচারীরা ছাড়াও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কবে নাগাদ সাভাবিক হবে তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই।
 
প্রাইভেট কার চালক জুম্মন বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, যেদিন রাস্তা কাটবে সেদিনই মাটি নেওয়া হবে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু নিয়েছে এক মাস পরে। এখন তো কাজই বন্ধ করে রাখা হয়েছে। রাস্তাটির পাশের বাড়ির বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম বলেন, আমি একজন হার্টের রোগী। আমার মতো বয়স্ক লোক অনেক আছে। কখন যে কার কোন অবস্থা হয়, তখন সে আর বের হতে পারবে না। বাসার মধ্যেই মরে যেতে হবে। কতোদিন লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ বলে দুইমাস লাগবে, কেউ বলে তিন মাস লাগবে। এর সঠিক সময় কেউ জানেনা। পাশেই একজন প্যারালাইজড রোগী আছে। তাকে প্রতি সপ্তাহে দুইদিন হাসপাতালে নিতে হয়। তাকেও এখন নেওয়া যাচ্ছে না। পাশের ব্যবসায়ী দরবার স্টোরের মালিক মোজাম্মেল হোসেন বেলেন, রাস্তায় অনেকেই চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারনে আগে সারাদিনে যে বেচাকেনা হতো এখন তার অর্ধেকও হয় না। খুবই খারাপ অবস্থা। পরিবার নিয়ে চলাই দায় হয়ে পড়েছে।
 
স্যুয়ারেজ উন্নয়ন কাজের সহ-ঠিকাদার শাহ সুলতান বলেন, যতোই কাবজাব করেন। দুই মাসের আগে কাজ শেষ হবে না। অনেক কাজ। তবে মাটিগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে। মানুষের যাওয়ার ও গাড়ি যাওয়ার একটা পরিবেশ করে দেওয়া হবে।
রাস্তার ড্রেসিং পনের দিন বা এক মাসের মধ্যেই শেষ করে ফেলবো। কিন্তু পাইপ বসানো কারনে সময় লাগছে। মাটি না বসলে রাস্তা করা যাবে না।
 
রাজধানীর রাজাবাজার এলাকারও একই অবস্থা। বিভিন্ন সড়ক কেটে রেখে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। মে মাসে শুরু হওয়া উন্নয়ন কাজ কবে শেষ হবে সংশ্লিষ্ঠ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। এলাকার বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটায় সমস্যা। পানি জমে থাকে। পানি যায়না। সবার যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। কাজটা ধীর গতিতে চলছে। কাজটা দ্রুত শেষ করা উচিত। এই কাদা পার হয়ে যাওয়া খুব কঠিন। আমাদের সবার গাড়ি বাসায় থাকে।
 
তিনি বলেন, ঠিকাদারের লোকেরা বলল এক মাসের মাঝেই হবে। কিন্তু এক মাস তো হয়েই গেছে। আমার মনে হয় কমপক্ষে আরো দুই মাস লাগবে। 
 
প্রিয় পাঠক, উন্নয়ন কাজের কারনে চরম জনভোগান্তি নিয়ে আমাদের বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখুন টাইমস ইনভেস্টিগেশনের ভিডিও প্রতিবেদনে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ২৫ কেজি দুধে স্নান করলেন হৃদয় মিয়া Jul 19, 2025
img
হাই অল্টিটিউড ম্যাচে কতটা প্রস্তুত জামালরা? Jul 19, 2025
img
সমর্থক গ্রেফতারে শীর্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড Jul 19, 2025
img
সরকারই উসকানি দিয়ে এনসিপিকে গোপালগঞ্জ পাঠিয়েছে : এলডিপি মহাসচিব Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশ সরকারের কাজের প্রশংসা করলেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট Jul 19, 2025
img
কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের লোক ছাত্রদের দল গঠনের বুদ্ধি দিয়েছে : অলি আহমদ Jul 19, 2025
img
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ চায় না বিএনপি Jul 19, 2025
হলফনামায় শেখ হাসিনার মি'থ্যা তথ্য, ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই ইসির Jul 19, 2025
img
মুজিববাদের কবর দিতে গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার নেই : এ্যানি Jul 19, 2025
বাংলাদেশে স্টারলিংক কার্যক্রমে সরকারকে ‘নজিরবিহীন’ বললো স্পেসএক্স Jul 19, 2025
‘হিরোস উইদাউট কেপস’ ডকুমেন্টারি: জুলাই আন্দোলনের প্রামাণ্য চিত্র Jul 19, 2025
img
জামালপুরে যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশে স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে চালু, রিসেলার বিএসসিএল Jul 19, 2025
img
দলীয় উন্নয়নেই মনোযোগ, আজও দ্বিতীয় সারির দল পাঠাবেন বাটলার Jul 19, 2025
img
পাকিস্তানের ইরানি দূত এখন এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড Jul 19, 2025
img
এসি মিলানে মডরিচ, ফিরে গেলেন ছোটবেলার প্রেমে Jul 19, 2025
img
সমাবেশের আগেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো জামায়াতকর্মীরা Jul 19, 2025
img
ক্ষমা নয়, কিসাসই চূড়ান্ত, ইয়েমেনি পরিবার অনড় নিমিশার মৃত্যুদণ্ডে Jul 19, 2025
img
দুবাইফেরত ৩ যাত্রীর কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকার পণ্য জব্দ Jul 19, 2025
img
ঘরের মাঠে গায়ানার চ্যালেঞ্জ, টানা দ্বিতীয় শিরোপার স্বপ্নে রংপুর Jul 19, 2025