আগাম সতর্ক বার্তার ওপর ভিত্তি করে দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, এজন্য আমরা ২০০৯ সাল থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় চিরাচরিত ‘দুর্যোগ পরবর্তী সাড়াদান ব্যবস্থাপনা’ থেকে ‘আগাম ব্যবস্থাপনা’ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বহুলাংশে কমিয়ে এনেছি। দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ১০৯০ (টোল ফ্রি) ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড আর্লি অ্যাকশন ফর অল’-কে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী বলে মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আকস্মিক বন্যা মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে রিমোট সেনসিং, জিআইএস, রাডার, স্যাটেলাইট তথ্য-চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে বন্যা আসার ৩ থেকে ৫ দিন আগেই বন্যার পূর্বাভাস ও বন্যার স্থায়িত্ব সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন উন্নত গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে ঘূর্ণিঝড় ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস ও সতর্কতা বার্তা প্রদান সম্ভব হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার এ পর্যন্ত উপকূলে প্রায় ৪ হাজার ২০০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, বন্যা প্রবণ এলাকায় ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং সারা দেশে ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ করেছে। আমরা ‘মুজিব কিল্লা’কে সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করে মানব ও প্রাণিসম্পদের জন্য নিরাপদ ও টেকসই আশ্রয়স্থল করেছি। দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আমাদের সরকারের বিনিয়োগ, দুর্যোগের পূর্বাভাস ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নতুন আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতি, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং উদ্ধার কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবীদের নিবেদিত প্রচেষ্টাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এক ডিজিটে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হয়েছে।