নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে ৩০০ বছর লেগে যাবে: জাতিসংঘ মহাসচিব

নারী–পুরুষ সমতার বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এ সমতা অর্জন এখনো অনেক দূরের ব্যাপার। সবমিলিয়ে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে আরও অন্তত ৩০০ বছর লাগবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ইউএন উইমেনের এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাতৃমৃত্যু, বাল্যবিবাহ, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া, অপরহরণ-নির্যাতনের শিকারসহ নারীদের নানা বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আসলে বিশ্বজুড়েই নারীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এসব প্রমাণ করে, নারী–পুরুষের সমতা অর্জনের অগ্রগতি দিনদিন শুধু দূরেই সরে যাচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, লাঞ্ছিত করা হচ্ছে ও হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে গুতেরেস আফগানিস্তানসহ কিছু দেশের নাম উচ্চারণ করেন। এসব দেশে নারী ও মেয়ে শিশুদের ভয়াবহ অবস্থার কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, তাদেরকে জনজীবন থেকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে। কিছু দেশে স্কুলে যাওয়া মেয়েরা অপহরণ ও হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে।

গুতেরেস আরও বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা পিতৃতন্ত্র, বৈষম্য ও নেতিবাচক মানসিকতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে নারী-পুরুষের মধ্যে বিশাল ব্যবধান তৈরি করেছে। তার মতে, নারী–শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংকট ও সংঘাতের কারণে। আর এ ধরনের পরিস্থিতির উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন।

নারী ও মেয়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে বিশ্ব যেন একপ্রকার চুপ করে আছে। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, সুশীল সমাজকে এ বিষয়ে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।

গত বছর জাতিসংঘের নারী অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউএন ওম্যান জানায়, বর্তমান অগ্রগতির যে হার, তা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের সব দেশ থেকে নারীর ওপর বৈষম্যবিষয়ক যাবতীয় আইনের বিলোপ ঘটতে সময় নেবে অন্তত ২৮৬ বছর। ১৪০ বছর লাগবে কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সমমর্যাদা, বেতন, ক্ষমতা ও নেতৃত্বে আসতে। এছাড়া রাজনীতি ও পার্লামেন্টে পুরুষ জনপ্রতিনিধিদের সমকক্ষ হতে নারীদের সময় লাগবে কমপক্ষে আরও ৪০ বছর।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘আমি জাদুকর নই’, আজারবাইজানের বিপক্ষে হারের পর বাটলার Dec 03, 2025
img
ছোট উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করার লক্ষ্যে শীঘ্রই বাংলাদেশে আসছে পে-পাল : গভর্নর Dec 03, 2025
img
দেশের ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান Dec 03, 2025
img
টিউলিপের বিচার ও দণ্ড প্রশ্নে দুদকের ব্যাখ্যা Dec 03, 2025
img
ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া: রাশেদ খান Dec 03, 2025
img
দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি: শিক্ষা উপদেষ্টা Dec 03, 2025
img
সুনামগঞ্জে ৪৭ হাজার ২৪২ ঘনফুট অবৈধ পাথর জব্দ Dec 03, 2025
img
এবার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা Dec 03, 2025
img
কর্মবিরতি স্থগিত সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের, বুধবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা Dec 03, 2025
img
মনকে আর বুঝাতে পারিনি, তাই চলে আসলাম, খালেদা জিয়াকে দেখতে এসে জামায়াত আমির Dec 03, 2025
img
বেগম জিয়ার এমন সংকটময় পরিস্থিতি আগে কখনো হয়নি: জামায়াত আমির Dec 02, 2025
img
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি একটি মহৎ অঙ্গীকার : পার্বত্য উপদেষ্টা Dec 02, 2025
img
মুগদা থানার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সামাদ উদ্দিন বিজয় গ্রেপ্তার Dec 02, 2025
img
ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় প্রাণহানিতে প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ Dec 02, 2025
শ্রীলঙ্কায় মানবিক সহায়তা পাঠাতে বাধা দিচ্ছে ভারত, অভিযোগ পাকিস্তানের Dec 02, 2025
img
পঞ্চদশ সংশোধনী মামলায় পক্ষভুক্ত হলো বিএনপি, শুনানি আগামীকাল Dec 02, 2025
img
অবশেষে একই ফ্রেমে প্রিয়াঙ্কা-আলিয়া-ক্যাটরিনা Dec 02, 2025
'আল্লাহ খালেদা জিয়াকে নেক হায়াত দাও' Dec 02, 2025
সিরিয়ার দক্ষিণে ইসরায়েলি হামলার পর ট্রাম্পের সতর্কবার্তা Dec 02, 2025
রাজশাহী নগরবাসীর নিরাপত্তায় আরএমপির বিশেষ উদ্যোগ Dec 02, 2025