পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, বেরিয়ে যা বললেন তারা

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত।

বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রায় একঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন তারা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোমেন। ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ীদের’ ভিসা না দেওয়ার যে নতুন নীতি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, তাতে সরকার ‘মোটেও ভীত নয়’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মোমেন বলেন, ‘আমেরিকার এই ভিসার রেস্ট্রিকশন শুধু সরকারি দলের ওপর না, অপজিশনের লোকজনেরও ওপর বর্তাবে। এতে করে আমরা আশা করি, এবার তারা (বিএনপি) ইনশাআল্লাহ একটু সচেতন হবে।’

তিনি বলেন, বিএনপির সময় ১ কোটি ২৩ লাখ ফেইক ভোটার তৈরি হয়েছে। যাতে ফেইক ভোট না হয়, সেজন্য ভোটারের ফটো আইডি করে দিয়েছি। কেউ কেউ অভিযোগ করে যে রাতের অন্ধকারে নাকি ভোট হয়ে যায়। সেজন্য আমরা স্বচ্ছ ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স তৈরি করেছি। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের জন্য আমরা শক্তিশালী ইসি তৈরি করেছি।

ইলেকশনের সময় এটাকে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করার দায়িত্ব কিন্তু সে ইলেকশন কমিশনের, সরকার তাদের সাহায্য করবে।’

মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করতে চাই, এইটাকেই তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সমর্থন দিয়েছে। সুতরাং, নাথিং টু ওরি…। সেই সঙ্গে তারা এও বলেছে যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের যে আগ্রহ, সেটাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য তারা এই নীতিটা করেছে।’

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও। তিনি বলেন, ‘গতকালের (বুধবার) ঘোষণা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি মার্কিন সমর্থনের একটি প্রয়াস। নতুন ভিসানীতির বিষয়ে গত বুধবারের বিবৃতি বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের অংশ।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি পূর্বনির্ধারিত, যা নিয়মিত বৈঠকের অংশ। দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে নতুন ভিসানীতি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানী‌তির ঘোষণা নি‌য়ে আমরা আলোচনা ক‌রে‌ছি। এটা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং যারা এই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত তাদের জন্য প্রযোজ্য, যাতে করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।’

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে তার বাসায় বৈঠক করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা।

প্রসঙ্গত, গতকাল (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবেন তাদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সে লক্ষ্যে নতুন এ ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।এর আওতায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়া হবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পশ্চিমা প্রযুক্তির হার এড়াতে যুদ্ধ থামান ট্রাম্প: ফরহাদ মজহার May 11, 2025
img
আর কোনো ফ্যাসিস্ট প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না: রফিকুল ইসলাম খান May 11, 2025
img
বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার May 11, 2025
img
মাস্কের উচিত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কষ্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া : মেলিন্ডা গেটস May 11, 2025
রাজধানীতে নিষিদ্ধ সংগঠনের ঠাঁই নেই: ডিআইজি May 11, 2025
img
পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দেখে হতভম্ব হয়েছে ভারত May 11, 2025
অতীতে নিষিদ্ধ হয়েছিল যেসব রাজনৈতিক দল May 11, 2025
img
কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করলেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় না: কাদের সিদ্দিকী May 11, 2025
img
বিচারিক প্রক্রিয়ায় আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে : এ্যানি May 11, 2025
img
চার বছর আগে ছিলেন ছাত্রী-শিক্ষক, এখন স্বামী-স্ত্রী May 11, 2025