বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পদক্ষেপ ও গৃহীত নীতির কারণে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ যে সফলতা অর্জন করেছে, তা নজিরবিহীন। সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অসাধারণ যোগ্যতা ও দক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বনেতাদের সন্মানসূচক অভিব্যক্তিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এতে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘শিষ্টাচারবিহীন ও অমার্জিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি বিশ্বনেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সুদক্ষ নেতৃত্ব, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব এবং কর্মকুশলতার উজ্জ্বল প্রভায় বিশ্বনেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার মেধা, মনন, সততা ও সাফল্যে এক সময়ের দরিদ্রপীড়িত অনিশ্চিত অর্থনীতির বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গৌরবোজ্জ্বল উপস্থিতি দেশের আপামর জনগণকে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত ও গর্বিত করেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য প্রদান করেছেন, তা শুভবোধ সম্পন্ন কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে জাতি প্রত্যাশা করে না।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। জনগণই একটি রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান শক্তি। প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন জনগণের ওপরই নির্ভর করে এবং জনমতকে ধারণ করেই সুসংগঠিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের তোলা সেলফি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা আনবে এমনটা নয়, তবে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে। বর্তমান সরকারের কোনও বন্ধু নেই বলে বিএনপি নেতারা এত দিন ধরে যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে, তার যথার্থ জবাব এই সেলফিতেই প্রতিফলিত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টই নয়, অন্য বিশ্বনেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উষ্ণ মনোভাব নিয়ে কুশল বিনিময় করেছেন, যার ছবি ও সংবাদ ইতোমধ্যে পণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দেশপ্রেমিক কোনও ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন দেশকে বন্ধুহীন করার আকাঙ্ক্ষা লালন-পালন করতে পারে না।


কিন্তু বিএনপি এই হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে দীর্ঘদিন ধরে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’


তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা লাগাতারভাবে তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছে। একইসঙ্গে তারা বিদেশি প্রতিনিধি এবং সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাদের সরবরাহকৃত বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্যে বিভ্রান্ত হয়ে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করলে বিএনপি পুলকিত বোধ করে এবং বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দাঁড় করানোর চক্রান্ত করে। আবার যখন সত্য উন্মোচিত হয়। তখন তারা নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে কথা বলেছেন। এই ভিসানীতিকে সরকারের পক্ষ থেকেও সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ভিসানীতি নিয়ে সরকার কখনও কোনও অস্বস্তিতে ছিল না। বরং ভিসানীতির কারণে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বিএনপির আগুনসন্ত্রাস এবং ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির ওপর একটি বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়েছে।’

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত সাফল্য ও অগ্রগতির নতুন নতুন মাইলফলক অতিক্রম করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির সামনে যে অঙ্গীকার করেছেন, তিনি তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। এক সময় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মঙ্গল-ঘরা পীড়িত এবং খাদ্য ঘাটতিতে জর্জরিত ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে সে সংকট জয় করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের শতকরা ২৯ ভাগ মানুষ বিভিন্ন ভাতার আওতায় এসেছে। সারা দেশে ১০ লাখের বেশি ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। পদ্মাসেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েসহ একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে ধারাবাহিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ আজ একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে শেখ হাসিনার সরব উপস্থিতি তারই প্রমাণ। বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের সম্মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ আপন করছি।’

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাজস্থান রয়্যালসে সাঞ্জু স্যামসনের বদলি হচ্ছে স্টাবস! Nov 03, 2025
img
নোয়াখালীতে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা দাহ Nov 03, 2025
img
৯ দিন বন্ধ থাকার পর ফের খুলছে উত্তরা ইপিজেডের ৪ কারখানা Nov 03, 2025
img
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামালের আয়কর নথি জব্দ Nov 03, 2025
img
৭ মাস পর সচিব পেল পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ Nov 03, 2025
img
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে যোগ দিলেন নতুন সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী Nov 03, 2025
img
নির্বাচনে সাড়ে ৫ লাখ আনসার-ভিডিপি মোতায়েন থাকবে, হবে এসবি ভেরিফিকেশন: আনসার মহাপরিচালক Nov 03, 2025
img
এবার চীন থেকে ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে বাংলাদেশ Nov 03, 2025
img
ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬ Nov 03, 2025
সংসদের নতুন ১০০ আসন দুর্নীতির নতুন দরজা খুলবে : ব্যারিস্টার ফুয়াদ Nov 03, 2025
হাসিনাকে ফিরিয়ে দিলেও, জাকির নায়েককে ভারতের হাতে দেব না! Nov 03, 2025
img
মারাঠি অভিনেত্রীর সঙ্গে গোবিন্দর প্রেমের গুঞ্জন, সর্তক করলেন সুনীতা Nov 03, 2025
img
সার্ভার স্টেশন নির্মাণে ২৪ ডিসির কাছে ভূমি চাইল ইসি Nov 03, 2025
img
সীমান্তে বিএসএফের অনুপ্রবেশের ঘটনায় পতাকা বৈঠক Nov 03, 2025
img
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত দাদি, জানতেন না বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার Nov 03, 2025
img
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ Nov 03, 2025
img
গুমের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের ছাত্রদল নেতা আশিকের Nov 03, 2025
img
বিসিবির বর্তমান কমিটির অধীনে ক্রিকেট খেলবে না ৪৩ ক্লাব Nov 03, 2025
img
নির্ধারিত হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার সময়সূচি Nov 03, 2025
img
জনগণের রায়ের সরকার চায় দেশবাসী: এ টি এম বারী ড্যানী Nov 03, 2025