বাজার সিন্ডিকেটে বিএনপির যোগসাজশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

বাজার সিন্ডিকেট ও মজুতদারির সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগসাজশ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন রমজান মাসে সরকারকে বিব্রত করার জন্য সিন্ডিকেট থাকতে পারে। খতিয়ে দেখতে হবে এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা আছে কিনা। এসব সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করা এবং নির্বাচিত সরকারের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করতে তারা অপচেষ্টা চালাতে পারে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিএনপির সংযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।’

বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক যে পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সংকট সারা বিশ্বে আজকে যে অস্থিরতা চলছে তার প্রভাব প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশেও পড়বে। কথা হচ্ছে সরকার বিষয়টিকে কিভাবে মোকাবিলা করছে। শেখ হাসিনা ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও তিনি বিভিন্নভাবে প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন।’

কোন দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে?- এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের জানান, সিঙ্গাপুরে রুটিন হেলথ চেকআপে গিয়েও তিনি দেখেছেন সেখানে জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুন-তিনগুণ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চলছে। এখানে সরকার নিষ্ক্রিয় নেই। প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণ সংকট মোকাবিলায় সময় দিচ্ছেন। আমাদের এখানে কোনো অবহেলা নেই। সরকার সব পদক্ষেপ যথাযথভাবে চেষ্টা করছে। গ্যাস, জ্বালানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মুখোমুখি সারা দুনিয়া। আমেরিকা, ইউরোপ, উন্নত-অনুন্নত বিশ্বেও এই সংকট চলছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশে সংকটের মধ্যেও বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে, নির্বাচন যখন হয়েই যাচ্ছে তখন তারা বলেছিল - বাংলাদেশে নির্বাচনের পর মার্চ মাসে দুর্ভিক্ষ হবে। আমাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে। এখনই গ্রাম পর্যন্ত আলোকসজ্জা শুরু হয়ে গেছে। একটা লোকও কি না খেয়ে মারা গেছে?’

এ সময় মজুতদার ও সিন্ডিকেট নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মজুতদার তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। কারা কোথায় সমস্যা সৃষ্টি করছে এবং রাজনৈতিক যে সংশ্লিষ্টতা, বিএনপির কোনো যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ সময় সোমালিয়ায় বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জিম্মিদের উদ্ধারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুবই সক্রিয়। জিম্মি ২৬ জনের ইন্সুরেন্সও আছে। দুর্ভিক্ষ পীড়িত সোমালিয়ায় আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতি। এখানে মুক্তিপণ আদায় মূল লক্ষ্য। আমাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগের কোনো ঘাটতি নেই।’

এ সময় ড. ইউনূসের সাজা নিয়ে মার্কিন সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘ডক্টর ইউনূস একজন ব্যক্তি। জানতে চাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কে? তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশের আইন আদালত আছে। যা সবার জন্য সমান। এখানে শ্রমিকেরা পাওনা না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আইন আদালত সব দেশের নিজস্ব ব্যাপার।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দাবিতো করতেই পারে। দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু সেটাও তো আমাদের ভেবে দেখতে হবে। সরকার এখানে উদাসীন নয়। এই বিএনপি এখন বেগম জিয়াকে নিয়ে বড় বড় কথা বলে, সরকারের সমালোচনা করে। কিন্তু বছরের পর বছর তত্ত্বাবধায়কের মামলা নিয়ে আদালতে তারা আইনি লড়াই করেনি। শুধু বিচারকে প্রলম্বিত করেছে। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে হবে। আজকে এটা স্বীকার করতেই হবে, শেখ হাসিনার উদারতায় খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারছেন।’

বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি Nov 20, 2025
img
পরীমণির প্রেমের তালায় নতুন নাম ‘শাওন’ Nov 20, 2025
img
মুসলিম কখনো গুজবের মাইক হয় না : আজহারি Nov 20, 2025
img
গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে শাহ আবদুল করিমের ছেলের মামলা, ২০ কোটি ক্ষতিপূরণ দাবি Nov 20, 2025
img
আপনারা নিজেরাই এক একটা হিংস্র, অশিক্ষিত জানোয়ার: সুনিধি নায়েক Nov 20, 2025
img
এশিয়ান কাপে ‘কোয়ালিফাই’ করে ফিরতে চায় বাংলাদেশ Nov 20, 2025
img
রাতের আঁধারে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, টিআইবির প্রতিক্রিয়া Nov 20, 2025
img
নেপালের মেরা পিক পর্বতের চূড়ায় ইমতিয়াজ-শাহনাজ Nov 20, 2025
img
আহান-অনীত বলিউডের নেক্সট কাপল : করণ জোহর Nov 20, 2025
img
জামায়াত কখনো মানুষের কাছে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করে না: মিয়া গোলাম পরওয়ার Nov 20, 2025
img
স্বামীর পরকীয়ার গুঞ্জনে এবার মুখ খুললেন গোবিন্দের স্ত্রী সুনিতা Nov 20, 2025
img
হামজাকে ধন্যবাদ দিয়ে মুশফিকের মন্তব্য Nov 20, 2025
img
নির্বাচনের আগে ঢাকা-১০সহ তিন আসনে হঠাৎ বিশেষ বরাদ্দ, উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া Nov 20, 2025
img
গণশুনানিতেই মন জয় করলেন ডিসি জাহিদুল ইসলাম Nov 20, 2025
img
ভারত সিরিজ স্থগিত, নারী বিসিএলে ফরম্যাটে বড় পরিবর্তন Nov 20, 2025
img
দুনিয়ার কথায় নয়, নিজের শক্তিতে বিশ্বাস রাখুন: অমিতাভ বচ্চন Nov 20, 2025
img
বিচার বিভাগ স্বাধীন করার শেষ ধাপ সম্পন্ন হলো: আসিফ নজরুল Nov 20, 2025
img
বনশ্রী-রামপুরায় অবৈধ সাইনবোর্ড উচ্ছেদে অভিযান চালাল ডিএনসিসি Nov 20, 2025
img
৯ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন করেছে ইসি Nov 20, 2025
img
অন্যকে নয়, নিজের কাজকে গুরুত্ব দিন: বিক্রান্ত ম্যাসি Nov 20, 2025