আগুন সন্ত্রাসীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা রাজনীতির নামে আগুন সন্ত্রাস করে, মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। এরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, রাজনীতিবিদ নয়। তাদের যারা আর্থিক সহায়তা দেয়, নেতৃত্ব দেয় তারা দুর্বৃত্তদের নেতা। সুতরাং বিএনপি- জামায়াতের নেতৃত্বে যে আগুন সন্ত্রাস বিভিন্ন সময় হয়েছে এবং এখনো ওত পেতে বসে আছে তাদের নেতারা হচ্ছে এই দুর্বৃত্তদের নেতা। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে
তুলতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীমের মৃত্যুতে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ওই স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি।

তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাস যারা চালায় তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা গত দুই তিন দশকে দুনিয়ার কোথাও আমি দেখিনি। আপনারা জানেন গত নির্বাচনের আগে কীভাবে ট্রেনের মধ্যে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। যাত্রী বেশে ঢুকে সেখানে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বের হয়ে গিয়েছে। তারা জানে সেখানে নারী-শিশু আছে, আগুনে পুড়ে তারা অঙ্গার হয়ে গেছে। এই যে আগুন সন্ত্রাস, এটা কল্পনারও বাইরে। সুতরাং আজকে যেমন কোনো জায়গায় আগুন না লাগে সেদিকে সচেতন হতে হবে।

মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসলে বাংলাদেশে অগ্নিনির্বাপণের জন্য ঘর-বাড়িতে এবং বিশেষ করে রেস্টুরেন্টগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাখা হয় না। আপনারা জানেন ঢাকা শহরে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার কারণে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যাতে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড আর না ঘটে, এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

মানুষের সচেতনতার অভাব থাকলে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেও অগ্নিনির্বাপণ করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফায়ার সার্ভিসকে কিন্তু ঢেলে সাজিয়েছেন। আমরা যখন সরকার গঠন করি ২০০৯ সালে, তখন দেশের মাত্র ৪০টা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ছিল। এখন প্রত্যেকটা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে। এটা একটা বিরাট অগ্রগতি। ফায়ার সার্ভিসে আগে বিশ তালায় উঠতে গিয়ে ফায়ার ফাইটিং করার ব্যবস্থা ছিল না। বিশ তলা বা আরও উঁচু ভবনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ফয়ার ফাইটিং করতে পারে তাদেরকে সেইভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যাতে আকাশ থেকেও অগ্নিনির্বাপণ করতে পারে সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবশেষে যেটি প্রয়োজন সেটি হলো মানুষের সচেতনতা। মানুষের সচেতনতার যদি অভাব থাকে তাহলে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেও অগ্নিনির্বাপণ করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশ একটি গরমের দেশ। আমাদের দেশের প্রত্যেকটি ঘরবাড়িতেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

সাপ্তাহিক গণবাংলার প্রধান উপদেষ্টা এম এ করিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ ছাড়া স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রয়াত আতাউর রহমানের একমাত্র কন্যা ফারদিন রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য মশিউর আহমেদ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. সুমন সরদার, মহাসচিব এম এ বাশার প্রমুখ।

Share this news on:

সর্বশেষ