বুধবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি

সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্য নিরসনে লাগাতার আন্দোলন ও ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এবার সকল গ্রেডে ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি জানিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের চলমান বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ জুলাই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে। রেলপথ ও সড়কপথ এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, এই আন্দোলন কিন্তু শিক্ষার্থীরা নিজেরাই তৈরি করেনি। হাইকোর্টের রায় ও সরকারের নিশ্চুপ ভূমিকার প্রেক্ষাপটে এই আন্দোলন। আমাদের আন্দোলনের ফলে জনগণের যে ভোগান্তি হচ্ছে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। কারণ আমরা এতদিন ধরে আন্দোলন করছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকার বা নির্বাহী বিভাগ থেকে কোনো আলোচনার ডাক বা আশ্বাস পাইনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা এমন একটা চূড়ান্ত সমাধান চাচ্ছি যাতে করে ভবিষ্যতে কোটা নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না হয়। সেজন্য আমরা অনগ্রসর জাতির কথা বিবেচনায় রেখে সংসদে আইন পাস করার মাধ্যমে কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবি করছি।

সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এটা কোটা বাতিলের নয় বরং বাস্তবতার সাথে সমন্বয় করে যৌক্তিক সংস্কার। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাদের দাবিকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছে। এই আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী নয়। বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের রিওয়ার্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি।

আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতি, পোষ্য কোটার বিরোধিতা করছি। আমাদের আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা সবাই সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, দুজন শিক্ষার্থী হাইকোর্টে আপিল করেছে। যারা আপিল করেছে তারা আমাদের সাথে সম্পৃক্ত নয়। আমাদের মূল দাবিটা মূলত নির্বাহী বিভাগের কাছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথেও সমন্বয় করেছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ে জরিপ ও সর্বসম্মতিক্রমে ৫ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী কোটা থাকবে।

সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমাদের আন্দোলন নির্বাহী বিভাগের কাছে। নির্বাহী বিভাগ থেকে লিখিত ডকুমেন্ট বা পরিপত্র জারি করে যদি নিশ্চিত করা হয় যে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল গ্রেডে যৌক্তিক সংস্কার করা হবে তাহলে আমরা আনন্দ মিছিল করে রাজপথ ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে আসবো।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ Dec 04, 2024
img
অর্থ পাচার:কীভাবে গোটা দেশের অর্থনীতি খালি করে দেয়া হলো,চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ Dec 04, 2024
img
সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঘোষণা আসবে:জামায়াত আমির Dec 04, 2024
img
ভারতের সঙ্গে রামপালসহ ক্ষতিকর চুক্তিগুলো বাতিলের দাবি রাজনৈতিক দলগুলোর Dec 04, 2024
img
দেশকে অস্থির করার চেষ্টা চলছে,সবাইকে একজোট থাকতে হবে:ড. ইউনূস Dec 04, 2024
img
সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় জনমত জরিপ ৫-১০ ডিসেম্বর Dec 04, 2024
img
অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে নায়ক বাপ্পির 'ডেঞ্জার জোন' Dec 04, 2024
img
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল তা সঠিক নয়:পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 04, 2024
img
জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য:গভর্নর Dec 04, 2024
img
বন্ধ হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাসিন্দাদের মিলনমেলা Dec 04, 2024